নিজস্ব প্রতিবেদক, বোয়ালমারী
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তৈরি একতারা, দোতারা, সরোস, সরোত, খঞ্জুরি এখন কেবল স্থানীয় পর্যায়েই নয়, পৌঁছে যাচ্ছে কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। এমনকি ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে এসব লোকজ বাদ্যযন্ত্র, এমনটাই জানিয়েছেন কারখানার মালিক সাধু হেলাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধু হেলালের কারখানায় তৈরি বাদ্যযন্ত্রগুলো কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাগুরা জেলাসহ দেশের নানা এলাকায় পাইকারি দামে বিক্রি হয়। তার বাড়ি বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের ডহরনগর গ্রামে। তিনি প্রায় সাত বছর ধরে রূপাপাত ইউনিয়নের কালিবাড়ি এলাকায় অবস্থিত নিজের কারখানায় এই বাদ্যযন্ত্রগুলো তৈরি করে আসছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানায় চারজন শ্রমিক কাজ করেন। একতারা ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০০ টাকা পর্যন্ত, আর দোতারা, সরোস ও সরোত ৪ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
সাধু হেলাল দৈনিক কুমারকে বলেন, “আমি সাত বছর ধরে এসব বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছি। আশপাশের ছোট-বড় মেলাগুলোতেও এগুলোর চাহিদা রয়েছে। ভারতেও পাঠানো হয়। আমার কারখানায় নিয়মিত চারজন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের প্রতিদিন ৭০০ টাকা করে মজুরি দিতে হয়। প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়।”
বোয়ালমারীর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমীর চারু দৈনিক কুমারকে বলেন, “এক সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষ লোকসংগীত, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি গাইতো একতারা-দোতারা বাজিয়ে। বর্ষাকালে উঠানে মানুষ জড়ো হয়ে রাতভর গান গাইতো। এখন তা প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফলে একতারা-দোতারার কদর অনেকটাই কমেছে।”
এ বিষয়ে রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সোনা মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, “সাধু হেলাল বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে একদিকে যেমন জীবিকা নির্বাহ করছেন, অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজ সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তার কারখানাটি টিকিয়ে রাখতে আমাদের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা থাকবে।”
Leave a Reply