নিজস্ব প্রতিবেদক, নড়াইল
নড়াইল সদরের সঙ্গে কালিয়া ও নড়াগাতীর যোগাযোগ স্থাপনে নির্মাণ করা হচ্ছে কালিয়া সেতু। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্টিলের স্প্যানও আসতে শুরু করেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, কয়েক মাসের মধ্যে এগুলো স্থাপনের পর সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এতে এলাকার মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে। ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নকশায় ত্রুটি ও বালুবোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় নির্মাণাধীন পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুবার নকশা পরিবর্তন, মাসের পর মাস কাজ বন্ধ থাকা, শুরু থেকেই অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো, নির্মাণে ধীরগতির কারণে ষষ্ঠ মেয়াদে চলতি বছরের মাঝামাঝি এসেও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৫ কোটি টাকা। পরে প্রথমে ১০ কোটি এবং দ্বিতীয় দফায় ৬১ কোটি টাকা বাড়ানো হয়।
কালিয়ার শহীদ আব্দুস ছালাম ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. আবু সাহিদ সপ্তাহে পাঁচ দিন নড়াইল শহর থেকে কালিয়ায় যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, জেলা শহর থেকে কালিয়ার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার হলেও নদীর কারণে যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। কাজটি দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তিনি।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সদরের সঙ্গে কালিয়া ও নড়াগাতীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বারইপাড়ায় নবগঙ্গা নদীর ওপর ৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার লম্বা ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। কার্যাদেশ পাওয়া মেসার্স এমডি জামিল ইকবাল অ্যান্ড মো. মইনুদ্দীন বাঁশি জেভি ফার্মের ২০১৯ সালের জুনে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তখন মাত্র ২৩ ভাগ সম্পন্ন করে। এক বছর পর সেতুটি নিচু হওয়া, পাইল ক্যাপ-সংক্রান্ত জটিলতাসহ বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়ে।
এসব কারণে নকশা পরিবর্তনের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে কাজ ছয় মাস বন্ধ থাকে। ২০২০ ও ২০২১ সালের বর্ষায় নির্মাণাধীন ৯ নম্বর পিলারে বালুবোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে নকশা পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়লে কাজ পিছিয়ে যায়। পরিবর্তিত নকশা অনুযায়ী পিলার যাতে আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সে জন্য চারপাশে স্টিলের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি এবং ৭, ৮, ১০ ও ১১ নম্বর পিলারে তিনটি স্টিলের স্প্যান বসানোর সিদ্ধান্ত হয়।
পরিবেশ ও উন্নয়নকর্মী শাহ আলম বলেন, নবগঙ্গা নদীর ওপরের সেতুটি নড়াইলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কংক্রিট অ্যান্ড স্টিল টেকনোলজির এজিএম মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘স্টিলের স্প্যানের বিভিন্ন অংশ আসতে শুরু করেছে। এখনও সব পৌঁছায়নি।  ডিসেম্বরের আগেই এটি উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে।
