রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
বোচাগঞ্জে হারিয়ে যাওয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত, ওসির বক্তব্যে প্রশ্ন উঠছে বোচাগঞ্জে মডেল মসজিদ নির্মাণে অনিয়ম: গাঁথুনির কাজ স্থগিতের নির্দেশ সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর নির্বাচন: সভাপতি ও সম্পাদক পদে তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল কাহারোলে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২ কর্মী আট বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবক সমাবেশ  বালিয়াকান্দিতে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত, নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সালথা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাহিন গ্রেপ্তার চরভদ্রাসনে মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন বালিয়াকান্দি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলেন এসিল্যান্ড বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন

‘১৫ বছর ধরে ধুঁকছে পুঁজিবাজার, মার্জিন ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা’

  • Update Time : রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১০.০৪ এএম
  • ১৪৭ জন সংবাদটি পড়েছেন

ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারে চরম আস্থা সংকট চলছে। প্রতিদিনই বাজারে লেনদেন তলানিতে চলে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারে দরপতনের কারণে বিভিন্ন সময় পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে মার্জিন ঋণ দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। একাধিক সময়ে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সুফল মিলছে না। প্রতিনিয়ত এই ঋণের বোঝা বাড়ছে। প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা মার্জিন ঋণে আটকে গেছে বলে মনে করছেন দেশের পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

 

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং মার্চেন্ট ব্যাংকে মোট মার্জিন ঋণ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউসগুলো মার্জিন ঋণ দিয়েছে ১১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, এরমধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটির প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্ট (ঋণাত্মক ইক্যুইটির মূলধন) ৫ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা এবং ইন্টারেস্ট (সুদ) ১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এতে করে ডিএসইর মোট নেগেটিভ ইক্যুইটি হচ্ছে ৬ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ডিএসই প্রোভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করে রেখেছে ১ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। এদিকে সিএসইর মার্জিন ঋণ ৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে ঋণাত্মক ইক্যুইটি ২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। মূলধন ৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সুদ ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকের সর্বমোট মার্জিন ঋণ ৬ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা, এদের মূল বিনিয়োগসহ সর্বমোট ঋণাত্মক ইক্যুইটি ৪ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এই টাকার মধ্যে মূল বিনিয়োগ ২ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, ইন্টারেস্ট (সুদ) ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। একই সঙ্গে এদের প্রোভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করা আছে ১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে পুঁজিবাজারে সবগুলো ঋণাত্মক ইক্যুইটি সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

তবে ডিএসই ও মার্চেন্ট ব্যাংক ঋণাত্মক ইক্যুইটি রাইট আপ করার জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিএসইসির কাছে সময় চেয়েছে। এই ঋণাত্মক ইক্যুইটির রিফাইন্যান্সের (পুনঃঅর্থায়ন) জন্য ডিএসই থেকে একটি আবেদন করা হয়েছে। যেটি ইতোমধ্যে বিএসইসির পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এক কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, মার্জিন ঋণ প্রতিদিনই বাড়ছে, এটা আপডেট (হালনাগাদ) হচ্ছে। এটা কীভাবে মার্কেট কাভার করবে? এটার ম্যানেজমেন্টটা (ব্যবস্থাপনা) যদি ঠিক না হয়, তাহলে সমস্যাটা দীর্ঘস্থায়ী থাকবে। মার্জিন ঋণের অবস্থাটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে—খাচ্ছে দাচ্ছে কিন্তু মোটা হতে পারছেন না। অনেকটা ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে।

বিএসইসির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাজারে ঋণাত্মক ইক্যুইটি কেন তৈরি হলো, তার একটি কারণ মার্জিন বিধিমালা সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়নি। এটা প্রয়োগ করার প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল স্টক এক্সচেঞ্জের এবং সেকেন্ডারি দায়িত্ব ছিল বিএসইসির। মার্জিন ঋণের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সেটা প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি। একটা নোটিফিকেশন (প্রজ্ঞাপন) আছে ৩ এর ৫ ধারায় মার্জিন কল করা, কিন্তু কমিশন মার্জিন কল করতে দেয়নি, মার্জিন কল করতে না দেওয়ায় এটা নিচে নেমে গেছে। মার্জিন ঋণ যখন ১.২৫ এর মধ্যে চলে আসছে তখন সেটা বেচা হয়নি, একই সঙ্গে মার্জিন কল করা হয়নি। সে সময় বিএসইসি থেকে মৌখিকভাবে ‘ফোর্সড সেল’ (জোরপূর্বক বিক্রি) নিষেধ করা হয়েছে। বিধিমালায় বলা হয়, মার্জিন ঋণ যখন ১.৫০ এ নামবে তখন বিনিয়োগকারীকে কল দেওয়া হবে, এরপর ১.২৫-এ নেমে গেলে শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে। অ্যাডজাস্টিং রোল বা বিধিমালা যেটা আছে, এটার সঠিক প্রয়োগ হলে একজন বিনিয়োগকারীর জিরো হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ইক্যুইটি ঋণাত্মক হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে গত দুই কমিশন মৌখিকভাবে ফোর্স সেল দিতে একাধিকবার নিষেধ করেছিল, যা আজ ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে।

মার্জিন ঋণ বিধিমালায় বলা আছে, যখনই কোনো গ্রাহকের মার্জিন অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে যায়, তখন গ্রাহককে ইক্যুইটিটি ১৫০ শতাংশের কম না করার জন্য অতিরিক্ত মার্জিন প্রদানের জন্য অনুরোধ করবেন।

বিনিয়োগকারীকে নগদ বা মার্জিনেবল সিকিউরিটি জমা দিয়ে এই অতিরিক্ত মার্জিন পূরণ করতে হবে। কোনো ব্রোকারেজ হাউস গ্রাহকের মার্জিন অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি কোনোভাবেই ডেবিট ব্যালেন্সের ১২৫ শতাংশের নিচে নেমে যেতে দেবে না। একবার ইক্যুইটি এই স্তরের নিচে নেমে গেলে ক্লায়েন্টকে কোনো নোটিশ ছাড়াই ফোর্সড সেল করতে পারবে।

ধরা যাক, একজন বিনিয়োগকারী একটি কোম্পানির ১০০ টাকার শেয়ার কিনলেন এবং ১০০ টাকা ব্রোকারেজ হাউস থেকে ঋণ নিলেন। ২০০ টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ করে যদি তার মোট শেয়ার দর ২০০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কমে ১৫০ টাকায় দাঁড়ায় তখন বিনিয়োগকারীকে ব্রোকারেজ হাউজ মার্জিন ঋণ বিধিমালায় কল করবেন। এরপরও যদি শেয়ার দর ১৫০ টাকার নিচে চলে আসে অর্থাৎ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ ১২৫ টাকায় চলে এলে ব্রোকার হাউজ ফোর্সড সেল করবে। এতে বিনিয়োগকারীকে জিজ্ঞেস করার কোনো প্রয়োজন হবে না।

এমটিবি সিকিউরিটিজ লিমিটেড নামক হাউজে বিনিয়োগ করেছেন সৈয়দ রবিউল ইসলাম। বাজারে তার বিনিয়োগ ছিল ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পরে বিভিন্ন অনুপাতে কোড এ লোন নিয়ে ব্যবসা করার কারণে তার রিয়েলাইজ লস (আনুমানিক ক্ষতি) ২৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৬৪ টাকা। বর্তমান বাজার মূল্যে তার কোডে বেক্সিমকোর শেয়ার আছে ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬৩০ টাকার। একই সঙ্গে তার কোডে লোন আছে ৬ লাখ ২৮ হাজার ৪২১ টাকার। আজ যদি তার শেয়ার বিক্রি করার সুযোগ থাকতো তাহলে তিনি পূর্বের ঋণ শোধ করার পর ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা ক্যাশ পেতেন। কিন্তু তার কোডে ইতোমধ্যে নতুন ইন্টারেস্ট বাবদ ৩৪ হাজার ৪০৪ টাকা তিনি পরিশোধ করে নিট ৩০ হাজার ৮০৪ টাকা হাতে পেতেন। তবে এটাও তিনি নিতে পারছেন না, শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার কারণে টাকা তুলতে পারছেন না। কিন্তু প্রতিনিয়ত কোডে ঋণ থাকায় তার ইন্টারেস্ট যোগ হচ্ছে। যদি এই শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে শেয়ারের দাম আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে তার কোডে ইক্যুয়িটি ঋণাত্মকে দাঁড়াবে বলে উল্লেখ করেন ওই বিনিয়োগকারী।

তবে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া রবিউল জানেন না আগামীর দিনগুলো কীভাবে কাটবে, পরিবার নিয়ে কীভাবে বাঁচবেন। এই বাজার শুধু রবিউল নয়, এরকম হাজার হাজার বিনিয়োগকারীকে নিঃস্ব করেছে। এর দায় বিগত কমিশন কোনোভাবেই এড়াতে পারে না বলে মনে করেন মা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী মশিউর রহমান। তিনি বলেন, জেড ক্যাটাগরির শেয়ার অতিমূল্যায়িত হলেও কমিশনের গা-ছাড়া পদক্ষেপে বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা কারসাজি হলেও নামমাত্র জরিমানা করে কারসাজি চক্রকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের জন্য গলার কাঁটা! বছরের পর বছর এই ইস্যুতে বাজার প্রায়শ অস্থির থাকে বলে মনে করেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আতাউল্লাহ নাঈম। তিনি বলেন, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমানে গলার কাঁটা হিসাবে পরিগণিত। বছরের পর বছর এই ইস্যুতে বাজার প্রায়শ অস্থির থাকে। এর কারণে ঋণ না নিয়ে যারা ক্যাশ অ্যাকাউন্টে (হিসাব) বিনিয়োগ করেন তারাই বলির পাঁঠা হন।

আতাউল্লাহ নাঈম আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে আইনি সীমার বাইরে মার্জিন নেওয়ার কারণেও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পুঁজিবাজারের ক্যান্সার, পুঁজিবাজারে থাকার বিষয়টা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। গোষ্ঠীগত স্বার্থেই বর্তমানে মার্জিন ঋণ ইস্যু ব্যবহৃত হচ্ছে। যার দ্রুত অবসান হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য ক্যান্সার ডিজিজ। এটা নিরাময় না হলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। এটা রিমুভ করতে হলে সরকার থেকে প্রণোদনা লাগবে। পৃথিবীর কোথাও রেগুলেটর ফোর্সড সেল বন্ধ করতে পারে না। আমাদের এখানে হয়েছে। তবে এর দায় বিএসইসিসহ উভয় পক্ষের বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার পথে প্রধান অন্তরায় মার্জিন ঋণ বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, মার্জিন ঋণ আমাদের বিনিয়োগকারী এবং বাজার উভয়ের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঋণ বাজারে উপকারের চেয়ে ক্ষতি করছে বেশি। এর কিছু কারণও আছে। আমাদের বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ ততটা ম্যাচিউরড (দক্ষ) নন। তারা তাদের সামর্থ্যের বাইরে অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে ফেলেন। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, চাঙ্গা বাজারেই তারা ঋণের প্রতি বেশি ঝোঁকেন। ফলে বাজারে যখন মূল্য সংশোধন হয়, তখন তাদের ক্ষতিটা হয় অনেক বেশি। দাম কমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান অনুপাত ঠিক রাখার জন্য নতুন করে গ্রাহককে টাকা জমা দিতে বলে, তখন তারা তা পারেন না। বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তখনকার বাজার মূল্যে শেয়ার বিক্রি করে দেয়, যাকে আমরা ফোর্সড সেল বলি। এতে বিনিয়োগকারী ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতির শিকার হন। অন্যদিকে ফোর্সড সেলের চাপে বাজারে আরও দর পতন হয়। তাতে আরও বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্ট ফোর্সড সেলের আওতায় চলে আসে। এই দুষ্ট চক্রের কারণে বাজার সহজে ঘুরে দাঁড়াতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, যদিও বিধিমালার কারণে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের তাৎক্ষণিক কোনো ক্ষতি হয় না। তারা শেয়ার বিক্রি করে ঋণের টাকা সমন্বয় করে নেয়। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে আসলে তাদেরও ক্ষতি হয়। কারণ মার্জিন ঋণের খপ্পরে পড়ে পুঁজি হারাতে থাকলে এক সময় গ্রাহক বাজার ছেড়ে চলে যান। তারা গ্রাহক হারায়। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা বলায় সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এ সঙ্কটের উত্তরণে বিনিয়োগকারীরা ও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান উভয়ের আরও সচেতন এবং দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের এই সাবেক সভাপতি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ঋণাত্মক ইক্যুইটি। মার্কেটে ঋণাত্মক ইক্যুইটি নিয়ে কমিশন কাজ করছে। ঋণাত্মক ইক্যুইটি কীভাবে রাইট আপ করা যায়, সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী ইন্টারমিডিয়ারি কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন কাজ করছে। খুব দ্রুত এই বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য অন্যান্য যে সাপোর্টগুলো দরকার, সেগুলোও দেওয়া।

তিনি বলেন, বাজার তার গতিতে চলবে, এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না এবং ঘন ঘন কোনো পলিসি (নীতি) পরিবর্তন করা হবে না। একইসঙ্গে গভর্নেন্সের (নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া) ব্যাপারে কমিশন কোনো আপস করবে না। কমিশন নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করছে, যেমন তারল্য বৃদ্ধির জন্য ব্যাংকের যে স্পেশাল ফান্ড (বিশেষ তহবিল) আছে, পরবর্তী ৫ বছরের জন্য রিনিউয়ালের (পুনঃঅর্থায়ন) চেষ্টা করছে, আশা করছি এটা হয়ে যাবে। ২০২৫ সাল পুঁজিবাজারের জন্য উন্নয়নের বছর হবে বলে উল্লেখ করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION