ঢাকাবুধবার , ১৩ আগস্ট ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. টপ নিউজ
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বিনোদন
  10. রাজনীতি
  11. লাইফস্টাইল
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সম্পাদকীয়
  15. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শিক্ষকের জীবনমান উন্নয়ন ও একীভূত শিক্ষা কাঠামো : টেকসই শিক্ষাব্যবস্থায় অতীব জরুরি 

Doinik Kumar
আগস্ট ১৩, ২০২৫ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

শিক্ষা একটি জাতির উন্নয়নের মেরুদণ্ড, আর এই মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করে তোলেন শিক্ষকরা। তাই পাঠ্যক্রম, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর উন্নয়ন যেমন জরুরি, তেমনি শিক্ষকের মর্যাদা, আর্থিক নিরাপত্তা ও পেশাগত উন্নয়ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে অনেক শিক্ষক জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্য কোনো আয়ের পথ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন, যা শিক্ষাদানের মান ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এইজন্য শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ৬% জিডিপি বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষকের জীবনমান উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধিকে বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করতে হবে, যার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়ন এবং গবেষণা।
শিক্ষকদের বর্তমান অবস্থা ও চ্যালেঞ্জ :
বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজ ন্যায্য বেতন, আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক মর্যাদার ঘাটতিতে ভুগছেন। সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের অনেক শিক্ষক বেতনের অভাবে কোচিং বা প্রাইভেট টিউশনের ওপর নির্ভরশীল। অনেকেই ছোটখাটো ব্যবসা ও ইনস্যুরেন্স কার্যক্রমের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে, আর বুয়েটের শিক্ষকরা বেসরকারি ফার্মে পরামর্শক হিসেবে অতিরিক্ত আয় করেন। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেতন কাঠামো না বাড়ায় সংকট আরও প্রকট হচ্ছে।
শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নের প্রস্তাবনা :
(১) মর্যাদাপূর্ণ বেতন কাঠামো: এমনভাবে বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে যাতে শিক্ষকরা শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্বেই মনোযোগ দিতে পারেন এবং মেধাবীরাও ভবিষ্যতে পেশায় আসতে আকৃষ্ট হন।
(২) পেশাগত উন্নয়ন: নিয়মিত প্রশিক্ষণ, উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন ও আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের সুযোগ বৃদ্ধি।
(৩) কর্মপরিবেশের উন্নয়ন: আধুনিক প্রযুক্তি, পর্যাপ্ত শিক্ষাসামগ্রী ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করা।
(৪) সামাজিক স্বীকৃতি: জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পুরস্কার ও সম্মাননা বৃদ্ধি।
বহুধা বিভক্ত শিক্ষা একীভূতকরণ :
বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষায় বিভক্ত। এ বিভক্তি দূর করতে:
(১) একক জাতীয় শিক্ষা কাঠামো: প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সমন্বিত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন।
(২) শিক্ষক যোগ্যতার একীকরণ: সব ধারার জন্য অভিন্ন প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা মানদণ্ড নির্ধারণ।
(৩) ডিজিটাল শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম: সবার জন্য একক অনলাইন কন্টেন্ট ও রিসোর্স সরবরাহ।
আন্তর্জাতিক উদাহরণ :
ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো শিক্ষকদের উচ্চ বেতন, মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করে শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বসেরা পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এসব দেশে শিক্ষকতা অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক ও সম্মানজনক পেশা।
শক্তিশালী শিক্ষা কমিশনের প্রয়োজনীয়তা :
একটি স্বাধীন ও খ্যাতনামা শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী শিক্ষা কমিশন প্রয়োজন, যা:
 দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করবে
 শিক্ষা খাতের বাজেট বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করবে
 বিভক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা একীভূতকরণের রোডম্যাপ তৈরি করবে
শিক্ষকরা জাতির নির্মাতা। তাদের মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়ন ছাড়া গুণগত শিক্ষা অর্জন সম্ভব নয়। একইসঙ্গে বিভক্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে একীভূত করে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা খাতে জিডিপির অন্তত ৬% বিনিয়োগ, শিক্ষক উন্নয়ন ও একীভূত শিক্ষা কাঠামো বাস্তবায়ন করলে আগামী প্রজন্ম হবে দক্ষ ও প্রতিযোগিতায় সক্ষম।
সময় এসেছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিশ্বমানদণ্ডে নিয়ে যাওয়ার, যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা কেবল প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান গড়ে তুলেই নয়, বরং সাহসিকতার সঙ্গে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে এখনই শক্তপোক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। কারণ শিক্ষাই হবে সেই শক্তির উৎস, যা তাদের হাতে তুলে দেবে দেশকে বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।