সোমির কান্তি, বালিয়াকান্দি
“এখন আর পার্বতীর সংবাদ লইতে ইচ্ছা করে না। তবে দেবদাসের জন্য বড়ই করোনা অনুভব হয়।” – এই কথাগুলো লিখেছেন বাংলা সাহিত্যের প্রতাপশালী লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের তারাপদ বিশ্বাস।
দেবদাস নাটকের প্রভাবশালী জমিদার মহেন্দ্র বাবুর ভূমিকায় অভিনয় করতেন এই তারাপদ বিশ্বাস। এখন তিনি নিজ বাড়িতে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। খোঁজ রাখেন এই যাত্রা অভিনেতাকে এক সময়ের মায়ের ঐতিহ্য, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য যাত্রা শিল্পী অগ্রগামী যাত্রাশিল্পের বিশেষ শিল্পী হিসাবে অভিনয় করতেন এই তারাপদ বিশ্বাস। মঞ্চ কাপানো এই শিল্পী অভিনয় করতেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক যাত্রা পালায়। জমিদার মহেন্দ্র বাবুর চরিত্রে অভিনয় করতেন। অভিনয় করে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন উপমহাদেশে।
দেবদাস নাটকের খলনায়ক মহেন্দ্র বাবু পার্বতীকে বিয়ে করে মহা আনন্দে ঘর সংসার করতে লাগলেন। এদিকে দেবদাস কলকাতার বাইজিপাড়ায় জীবনের শেষ মুহূর্তটুকু জন্য মনের দুঃখে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন।
কালজয়ী সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের দেবদাস নাটকের খলনায়ক মহেন্দ্র বাবুর চরিত্রে মঞ্চ কাপানো অভিনেতা তারাপদ কর্মকার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে রোগ শোকে চরাজীর্ণ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তিনি ১৯৫২ সালে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার মোষের পোল গ্রামের ডাক্তার গুরুদাস কর্মকারের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে তার ছোট কাকা নকুল কর্মকারের হাত ধরে যাত্রা জগতে প্রবেশ করেন। শিল্প মন-মানসিকতা নিয়েই এই সেই যুবকটি এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যতীন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ভোলানাথ অপেরায় সম্রাট শেরশাহ্ নাটকে খলনায়ক হিসাবে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম অভিনয় জগত শুরু করেন।
যাত্রাপালায় অভিনয়ের মাধ্যম দিয়ে তিনি মানুষের কাছে প্রশংসায় উদ্ভাসিত হয়ে যাত্রা জগতে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।
এই খ্যাতিনামা যাত্রাশিল্পী জীবনের শেষ প্রান্তে এসে গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, যাত্রাশিল্পে অভিনয় করে মানুষের প্রশংসা অর্জন করলেও বাস্তব জীবনে আমার নিজের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হটাতে পারিনি।
Leave a Reply