সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
চোট পেয়ে ১১ মিনিটে মাঠ ছাড়লেন মেসি ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে সব ব্যাংক টিটি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন ২৫ বছর বয়সি থাই কোচ বোচাগঞ্জে হারিয়ে যাওয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত, ওসির বক্তব্যে প্রশ্ন উঠছে বোচাগঞ্জে মডেল মসজিদ নির্মাণে অনিয়ম: গাঁথুনির কাজ স্থগিতের নির্দেশ সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর নির্বাচন: সভাপতি ও সম্পাদক পদে তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল কাহারোলে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২ কর্মী আট বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবক সমাবেশ  বালিয়াকান্দিতে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত, নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সালথা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাহিন গ্রেপ্তার

‘বাংলা ভাষা এখন আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত না’

  • Update Time : শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৪.৫৩ পিএম
  • ১৪৬ জন সংবাদটি পড়েছেন
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক

‘অমর একুশে বইমেলায় অধিকাংশই বই কিনতে নয়, আনন্দ-ফুর্তি করতে যায়, এটা খুব খারাপ লক্ষণ। জাতির অবক্ষয়ের লক্ষণ। শিক্ষণীয় জায়গা থেকে শিক্ষা নিচ্ছি না, এটা ভালো লক্ষণ না।’

বেশ আক্ষেপ নিয়েই কথাগুলো বলছিলেন ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। বয়স প্রায় ৯৫ বছর। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। তখন ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ালেখা করলেও তিনি সমাজ, সংস্কৃতি সাহিত্য চর্চা করে গেছেন বিরতিহীন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে কথা হয় এই গুণী ব্যক্তির সঙ্গে। শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে এই ভাষাসৈনিক বলেন, শিক্ষার্থীরা চিন্তা করুক তারা কীভাবে এই সমাজকে সুস্থভাবে তৈরি করতে পারবে, বড় করতে পারবে। তাহলে এই সমাজের জন্য সম্ভাবনাময় বিষয় রেখে যেতে পারবে।

এখনো আপনাদের মতো মানুষের মুখে বর্তমান প্রজন্ম ভাষা আন্দোলনের সেই উত্তাল দিনগুলোর কথা শুনতে চায়… বলার সঙ্গে সঙ্গেই বলেন, শুনতে চাইলে কী হবে! আমার দিন তো শেষ হয়ে গেছে। নতুনদের কাছ থেকে শুনবে। আপনাদের মতো যারা এই বিষয়ে (ভাষা আন্দোলন) নিয়ে কাজকর্ম করছেন তাদের কাছ থেকে শুনবে। যারা এসব বিষয়ে গবেষণা করছে তাদের কাছ থেকে শুনবে। আমাদের সময়টা তো শেষ হয়ে গেছে, কাজেই আমাদের থেকে কিছু শোনার নেই।

 

নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস ছিল এই ভাষাসৈনিকের। এখন পত্রিকা পড়েন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, পত্রিকা কেমন করে পড়বো! আমি তো চোখে দেখি না। দেশের খবর খুব একটা রাখা হয় না। যেটুকু শুনতে বা জানতে চাই উনি (পরিচারক আবুল কালাম) পড়ে শোনায়। এখন আর কারও সঙ্গে গল্প করতে ইচ্ছা করে না। মাঝে মধ্যে গান রিমেক করি। সব সময় করে উঠতে পারি না।

সবাই সকালে একসঙ্গে মিছিল করেছে, এটা ভুল। যারা মারা গেছে সবার নাম ঠিকমতো আসে না। তাহলে তো আমরা রফিক, বরকত আর সালামের নাম বলতাম না। এদের মধ্যে একমাত্র বরকতকে চিনতাম, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তবে তার সঙ্গে চলাফেরা হয়নি।

বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় বেশ আক্ষেপ নিয়ে বলেন, বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার কেমন করে করবে! বাংলা ভাষা এখন আমাদের জীবনের সঙ্গেও জড়িত না। বাংলা ভাষা গ্রামের ভাষা, গ্রামের লোকদের ভাষা।

বাংলা ও ইংরেজি মিশিয়ে কথা বলার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তো ঠিক না। যেটা বলবে শুদ্ধভাবে বলবে, ভালোভাবে বলবে এবং সঠিক উচ্চারণে বলবে।

ভাষা আন্দোলন নিয়ে স্মৃতি জানতে চাইলে আহমদ রফিক বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নিয়ে বলে, সবাই সকালে একসঙ্গে মিছিল করেছে, এটা ভুল। যারা মারা গেছে সবার নাম ঠিকমতো আসে না। তাহলে তো আমরা রফিক, বরকত আর সালামের নাম বলতাম না। এদের মধ্যে একমাত্র বরকতকে চিনতাম, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তবে তার সঙ্গে চলাফেরা হয়নি।

ভাষা আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের কেউ জীবীত আছে কি না সেটা স্মরণ করতে পারলেন না। বললেন, দু-একজন তো বেঁচে আছে… তবে এই মুহূর্তে বলতে পরছি না। আলী আজমল, শাহজাদপুরে প্র্যাকটিস করতো, ডাক্তার। বেঁচে আছে কি না খবর জানি না।

যে কোনো আন্দোলনে, সেই আন্দোলনটা যদি সঠিক হয় স্পিরিট থাকবে। এখন কথাটা হলো ভিন্ন, স্পিরিট থাকলেই যে আন্দোলন সঠিক পথে যাবে এমন তো কথা নেই।

আরও পড়ুন

‘রাষ্ট্র দেখভাল করে না, কোনো সরকারই করেনি’

২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে জানেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে এটা একটা কথা। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে তাকে নামিয়েছে এটাও তো ঠিক কথা। গণঅভ্যুত্থানের কতগুলো চরিত্র থাকে, নির্দিষ্ট স্বভাব থাকে। এটার কি তা ছিল? আমি এটা নিয়ে মাথাই ঘামাইনি। শেখ হাসিনা ঠিকমতো সরকার চালাতে পারেনি, তার পতন দরকার ছিল, পতন হয়েছে। এটাকে যদি আপনি গণঅভ্যুত্থান বলেন, সামরিক ক্যু বলেন সেটা কি ঠিক হবে?

১৯৫২ সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের সময় তরুণদের যে স্পিরিট ছিল বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে সেটি দেখতে পান কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আছে, বরং আরও বেশি আছে। থাকবে না কেন? যে কোনো আন্দোলনে, সেই আন্দোলনটা যদি সঠিক হয় স্পিরিট থাকবে। এখন কথাটা হলো ভিন্ন, স্পিরিট থাকলেই যে আন্দোলন সঠিক পথে যাবে এমন তো কথা নেই।

৯৫ বছর বয়সে এখনো সময় পেলে পরিচারককে দিয়ে ডায়রিতে লিখে রাখেন, পরে সেগুলো শুনে শুনে আবার সংশোধন করে দেন। এসব লেখা ভবিষ্যতে পাণ্ডুলিপি আকারে প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে বলেও জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION