রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন

২০২৫ সালে দ. এশিয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫.৬ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৬.৫৮ পিএম
  • ১৬৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড)। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ক্রমহ্রাসমান মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির গতি বাড়িয়ে দেবে।

এই সম্ভাবনার মাঝেও খাদ্যদ্রব্যের মূল্য অস্থিরতা বড় ধরনের ঝুঁকি হিসেবে রয়ে গেছে। পাশাপাশি, জটিল ঋণ পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো দেশসহ পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ওপর বড় চাপ তৈরি করবে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৩ শতাংশে নামবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার পথে নিয়ে যাচ্ছে। চাহিদা হ্রাস, বাণিজ্যনীতিতে আকস্মিক পরিবর্তন, আর্থিক অস্থিরতা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে চাপ বাড়ছে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য।

প্রতিবেদন বলছে, মানুষের অব্যাহত খরচ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক বিষয়াদি সহজীকরণের ফলে ভারতের অর্থনীতি ২০২৫ সালে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়েছে, যা গৃহস্থালির ব্যবহার এবং বেসরকারি বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলো উৎসাহিত করবে।

বাড়ছে বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা

ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করছে। সাম্প্রতিক শুল্কহার সরবরাহ চেইন ব্যাহত করছে এবং পূর্বাভাসযোগ্যতা কমিয়ে দিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তা একটি ঐতিহাসিক উচ্চতায় রয়েছে, ফলে এটি এরই মধ্যে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করছে এবং নতুন কর্মসংস্থানকে আঘাত করছে।

আঙ্কটাড প্রতিবেদন বলছে, অর্থনৈতিক মন্দা সব দেশকে প্রভাবিত করবে। তবে উন্নয়নশীল দেশ এবং বিশেষ করে সবচেয়ে দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোর বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে। অনেক নিম্নআয়ের দেশ বাহ্যিক আর্থিক অবস্থার অবনতি, টেকসই ঋণ ও অভ্যন্তরীণ প্রবৃদ্ধি দুর্বল হওয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হবে।

শক্তিশালী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নীতি সমন্বয়ের পাশাপাশি বিদ্যমান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সংলাপ ও আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে আঙ্কটাড।

২০২৪ সালের শেষভাগ এবং ২০২৫ সালের শুরুতে বৈশ্বিক বাণিজ্যে খানিকটা গতি এসেছিল মূলত অগ্রিম কার্যাদেশের ফলে। তবে এই গতি বছরজুড়ে স্তিমিত হয়ে যেতে পারে। এমনকি নতুন শুল্ক কার্যকর হলে উল্টো দিকেও যেতে পারে। বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তা ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করছে।

উন্নয়ন অর্থায়ন

প্রধান অর্থনীতিগুলোতে বাজেট ব্যয় এখন ভিন্ন খাতে স্থানান্তরিত হচ্ছে—সরকারি উন্নয়ন সহায়তা কমে যাচ্ছে, সামাজিক ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে আর প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ছে। এসব পরিবর্তনের ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অগ্রগতি ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কঠোর আর্থিক পরিবেশ ও বাড়তে থাকা অনিশ্চয়তার মধ্যে বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা উন্নয়ন অর্থায়নের দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনাকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঝুঁকি

বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের মধ্যকার সংযোগ শক্তিশালী করা অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। তবে বাহ্যিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি, অতিরিক্ত ঋণের বোঝা ও ঘরোয়া প্রবৃদ্ধির দুর্বলতায় অনেক নিম্নআয়ের দেশ এখন বহুস্তরীয় ঝুঁকির মুখোমুখি। যদি ভূ-অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও ব্যাহত করে, তবে দরিদ্র দেশগুলো বড় ধরনের হুমকির মধ্যে পড়তে পারে।

বাণিজ্যিক উত্তেজনা ও প্রবৃদ্ধির মন্থরতার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক খণ্ডীকরণ ও ভূ-অর্থনৈতিক সংঘাতের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের এ অঙ্গ সংগঠনটি। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিগত সমন্বয় জোরদার করা। একই সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক কাজে লাগানো, যা একটি ভঙ্গুর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা গড়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION