এম. এম. রহমান
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে সেপ্টেম্বরে কর্মবিরতি এবং অক্টোবরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বহাল রেখেছে সংগঠনটি।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী এসব তথ্য জানান।
ঘোষিত কর্মসূচি :
* ১৪ সেপ্টেম্বর: অর্ধদিবস কর্মবিরতি
* ১৫–১৬ সেপ্টেম্বর: পূর্ণদিবস কর্মবিরতি
* দাবি পূরণ না হলে ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি
আলোচনায় প্রাপ্ত অগ্রগতি :
অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী জানান, আলোচনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসিক বেতনের শতকরা হারে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। শিক্ষকদের দাবি কমপক্ষে ২০% বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি। এর আগে নির্দিষ্ট অঙ্কে (১,০০০ টাকা বাড়িয়ে ২,০০০ টাকা) প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শতকরা হারে বাড়ানো হবে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করার আশ্বাস দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এছাড়া মেডিকেল ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১,০০০ টাকা করার প্রস্তাব ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৭৫% করার প্রজ্ঞাপনও শিগগির জারি করা হবে। পাশাপাশি সর্বজনীন বদলি নীতি প্রণয়নের জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান :
বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। তবে বাজেট ও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সব দাবি একসঙ্গে পূরণ সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
তিনি জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের নেতাদেরকে ২০ আগস্টের মধ্যে বাড়ি ভাড়া ২০% বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে বলেন। জোটের নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে সেই হিসাব নবনিযুক্ত সচিব এবং শিক্ষা উপদেষ্টার পিএস-এর কাছে জমা দিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
শিক্ষক সমাজের প্রতিক্রিয়া
শিক্ষক নেতারা জানান, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় শিক্ষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে এমন ব্যাপক সাড়া আগে কখনো দেখা যায়নি। তারা মনে করছেন, দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান এখন নাগালের মধ্যে এসে গেছে। মিডিয়ার প্রচারের ফলে দেশের মানুষও বেসরকারি শিক্ষকদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হয়েছে।
শিক্ষক নেতাদের বক্তব্যে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে সারা দেশের শিক্ষকসমাজ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে অচল করার ঘোষণা দেবেন।
