নিজস্ব প্রতিবেদক, শরীয়তপু
শরীয়তপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে—সদর হাসপাতাল, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শিশুপার্ক ও জেলা শিশু একাডেমিসংলগ্ন শিল্পকলা একাডেমি মাঠে এবার বাণিজ্য মেলা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই শহরে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শরীয়তপুর জেলা শাখা ও স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জমা দিয়ে এই আয়োজনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

তাদের দাবি, শহরের বাইরে নিরিবিলি ও খোলা মাঠে মেলার আয়োজন করা হোক। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা চালাতে পারবেন, আবার নাগরিকেরাও ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবেন।
শরীয়তপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের পরীক্ষা সামনে। এমন সময়ে মেলার শব্দ ও ভিড় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করবে।
সদর হাসপাতালের সামনে ওষুধের ফার্মেসি ব্যবসায়ী ইকবাল খান বলেন, মেলার কারণে যদি সদর সড়ক অচল হয়, তবে ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ সবাই ভোগান্তিতে পড়বেন।
ইতিমধ্যে মাঠে প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আয়োজক আজহারুল ইসলাম জানান, ৫০ শতাংশ প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সবকিছু সম্পন্ন হবে।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসক মিজ তাহসিনা বেগম বলেন, ‘আমার যোগদানের আগেই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আজকে মেলা বন্ধের বিষয়ে আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
শরীয়তপুরে প্রতিবছর বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়। তবে সাধারণত শহরের বাইরে বা খোলা মাঠে এ মেলা বসানো হয়। এ বছর প্রথমবারের মতো সদর হাসপাতাল, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও শিশুপার্কের মাঝ পয়েন্ট শিশু একাডেমি মাঠে মেলার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়ায় বিরোধ দেখা দিয়েছে।
হাসপাতাল, বিদ্যালয়, শিশু একাডেমি ও শিশুপার্কসংলগ্ন এলাকায় বাণিজ্য মেলার আয়োজন শহরের নাগরিক জীবনে ভোগান্তি ডেকে আনবে বলে মনে করছে সচেতন মহল। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের হাতে। এখন সবার চোখ প্রশাসনের দিকে—তারা কি জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিকল্প স্থানে মেলার আয়োজন নিশ্চিত করবে, না বিতর্কিত স্থানেই মেলা বসাবে?
