গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি কিংবা হারবাল টি–এর পাশাপাশি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে সজনে পাতার চা বা মোরিঙ্গা চা। এতে আছে অসাধারণ সব পুষ্টিগুণ, যা প্রতিদিনের ক্লান্তি কমানো থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর।
গ্রিন টি না সজনে পাতার চা?
গ্রিন টি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়। এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা বিপাক বাড়াতে সাহায্য করে। তবে গ্রিন টিতে ক্যাফেইন রয়েছে, যা অনেকের ক্ষেত্রে ঘুম ও মাথা ধরার সমস্যা বা অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে সজনে পাতার চা সম্পূর্ণ ক্যাফেইনমুক্ত হলেও এতে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ — যা শুধু বিপাক বাড়ায় না, বরং রক্তচাপ, শর্করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই যারা ক্যাফেইন এড়িয়ে যেতে চান, তাদের জন্য গ্রিন টির তুলনায় সজনে পাতার চা হতে পারে আরও নিরাপদ বিকল্প।
চলুন জেনে নেওয়া যাক আর কী কী গুণ আছে এই চাযের-
১. ক্যাফেইন মুক্ত, অথচ বিপাক উন্নত
সজনে পাতার চা সম্পূর্ণ ক্যাফেইনমুক্ত হলেও শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং দিন শুরুতে প্রাকৃতিক শক্তি জোগায়।
২. প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর
সজনে পাতায় আছে প্রচুর প্রোটিন ও আঁশ। ফলে দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য সকালের এক কাপ সজনে চা হতে পারে চমৎকার সঙ্গী।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
সজনে পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। বিশেষত মৌসুমি সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা বা শ্বাসনালীর সমস্যা কমাতে এটি বেশ কার্যকর বলে মনে করা হয়।
৪. রক্তচাপ ও রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
এই পাতায় রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। আবার পর্যাপ্ত আয়রন থাকায় এটি রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।
৫. দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য রক্ষায় উপকারী
সজনে পাতার চা নিয়মিত পান করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। একই সঙ্গে এটি রক্তে শর্করার ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উপকারী। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায়।
আরও কিছু উপকারিতা
>> ত্বক ও চুল সুস্থ রাখে, বার্ধক্যজনিত ক্ষয় কমায়।
>> মানসিক চাপ কমাতে ও ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
যেভাবে খাবেন
শুকনা সজনে পাতা বা টি-ব্যাগ এক কাপ গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে তৈরি করুন এই চা। চাইলে সামান্য মধু বা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। প্রথমে দিনে এক কাপ দিয়ে শুরু করা ভালো, পরে ধীরে ধীরে দুই-তিন কাপ পর্যন্ত পান করা যেতে পারে। তবে গর্ভবতী নারী বা বিশেষ রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
