শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:২৩ অপরাহ্ন

বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস ১২ বছরের পরিশ্রম, ডাগুয়ের যেভাবে ফটোগ্রাফি বদলে দিলেন

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫, ৮.০৫ পিএম
  • ৪৯ জন সংবাদটি পড়েছেন

আজকাল ফটোগ্রাফির সংজ্ঞা বদলে গেছে। শুধু অফিসিয়াল প্রয়োজনে নিজেদের ছবি কিংবা ফুল পাখির ছবি তোলাই শেষ নয়। স্মৃতি ধরে রাখতে বিয়েসহ নানান অনুষ্ঠান আয়োজনে বিভিন্ন থিমে ছবি তোলেন। এর জন্য ফটোগ্রাফির উদ্ভাবক বিশেষ ধন্যবাদ পান বটে।

অনেকে শখের বশে ফটোগ্রাফি করেন, আবার কেউ পেশা হিসেবে নিয়েছেন একে। একটি ঠিক ছবি তোলার জন্য অনেকে বছরের পর বছর কাটিয়ে দেন। বিশেষ করে যারা ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি করেন তাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হয় আরও বেশি।

তবে ফটোগ্রাফির উদ্ভাবক লুইস ডাগুয়েরের ছবি তোলার এই পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পরিশ্রম করতে হয়েছে ১২ বছর। লুইস ডাগুয়েরের উদ্ভাবিত পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ডাগুয়েরো টাইপ’ ফটোগ্রাফি। টাই ইতিহাসে প্রথম ‘আধুনিক সফল ফটোগ্রাফি পদ্ধতি’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

১৮৩৮ সালে তিনি ‘বোলেভার্ড ডু টেম্পেল’ নামক একটি ছবি তোলেন, যা ফটোগ্রাফিতে প্রথমবারের মতো মানুষের অবয়ব ধরা পড়ে। এই ছবিতে রাস্তার এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকা একজন জুতা পালিশকারী ও তার কাস্টমার ধরা পড়ে, কারণ তারা কয়েক মিনিট স্থির ছিল। বাকিরা নড়াচড়া করায় তারা ছবিতে দেখা যায় না।

তবে লুইসের অনেক আগেই আরও একজন ফটোগ্রাফির পদ্ধতি আবিষ্কারের পথ বের করতে গবেষণা শুরু করেছিলেন। তিনি ফ্রান্সের বিজ্ঞানী জোসেফ নিপস। নিপস ফটোগ্রাফি উদ্ভাবনের কাজ প্রথমে শুরু করলেও সর্বপ্রথম ছবি তোলার ব্যবহারিকের গুরুত্ব এবং উপায় আবিষ্কার করেন ফ্রেঞ্চ বিজ্ঞানী লুই।

১৮২৫ সাল থেকে লুই নিপসকে চিনতেন। নিপস সর্বপ্রথম সিলভার ক্লোরাইড এবং সিলভার হ্যালাইড ফটোগ্রাফি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছিলেন। কিন্তু আলোর সংস্পর্শে এলে কীভাবে অন্ধকার হওয়া থেকে রোধ করা যায় তা তিনি ঠিক বুঝতে পারছিলেন না।

১৮৩৩ সালে নিপেসের মৃত্যু হলে ডাগুয়ের ফটোগ্রাফি এবং তার ডায়োরামা নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যান। রাসায়নিক এবং রৌপ্য প্লেট একত্রিত করার পরে, তিনি ডাগুয়েরোটাইপ প্রক্রিয়া নিয়ে এসেছিলেন। তিনি এক্সপোজার সময়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডে নামিয়ে আনেন। যা নিপস করেছিলেন আট ঘণ্টা। এটি ফটোগ্রাফির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে, যা ক্যামেরার গ্রহণযোগ্যতা এবং সাফল্যে ব্যাপক অবদান রেখেছে। ১৮৩৯ সালে ডাগুয়েরোটাইপ বিশ্বের জন্য বড় উপহার হিসেবে অ্যাখ্যা পায়।

১৮৩৯ সালের ১৯ আগস্ট ‘ডাগুইরিয়ো টাইপ’ ফটোগ্রাফি মুক্তি লাভের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ফটোগ্রাফির সফল যাত্রা। সেদিন ফ্রেঞ্চ একাডেমি অব সায়েন্স’ প্যারিসে একটি জনসভার আয়োজন করে এবং সেখানে এই কীভাবে ছবি তোলা হয়, সেটি সবাইকে দেখানো হয়। ১৮৩৯ সালের ১৯ আগস্ট ফরাসি সরকার এই দিনকে বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

এরপর একবিশং শতাব্দিতে এটি ডিজিটালি শুরু করেন অস্ট্রেলীয় আলোকচিত্রী কোরস। তিনি সারা পৃথিবীর সব আলোকচিত্রীদের একত্রিত করার লক্ষ্যে ‘ওয়ার্ল্ড ফটো ডে’ আয়োজন করে ২০০৯ সালে। এর মাধ্যমে ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট প্রথম অনলাইন গ্যালারির আয়োজন করা হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর দিনটিকে বেশ ঘটা করেই পালন করেন আলোকচিত্রীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION