নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর
ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম মো. নাসিরকে (৫১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকার পল্লবী থানার আফতাবনগর এলাকার গাজী মসজিদ থেকে স্থানীয় ছাত্র-জনতা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরপর তাকে ফরিদপুরে হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় নাসিরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও ফরিদপুর জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার পাশাপাশি একাধিক মামলা রয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গোলাম মো. নাসির ফরিদপুর শহরের ওয়্যারলেসপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি, মোটর ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং ফরিদপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গা-ঢাকা দিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাসির ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গা-ঢাকা দেন। এরপর জানুয়ারিতে ঢাকায় শ্রমিক ফেডারেশনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে আফতাবনগর গাজী মসজিদে জুমার নামাজ শেষে বের হলে স্থানীয় ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়েন এবং গণধোলাইয়ের শিকার হন। পরে তাকে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দুই দিন আগেও নাসির ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় অংশগ্রহণ করেন। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে জেলা দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও বিস্ফোরক বোমা প্রস্তুত ও অবৈধ অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগও রয়েছে।
ফরিদপুর কোর্ট ইন্সপেক্টর নাজনীন খানম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা ১৫/১০ নম্বর মামলার অন্যতম আসামি নাসির। বিশেষ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, শুক্রবার স্থানীয়রা নাসিরকে আটক করে পল্লবী থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে তাকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়। ওসি জানান, নাসির এজাহারভুক্ত আসামি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে, তবে আদালত তা শুনানি না করে পরবর্তী দিন শুনানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Leave a Reply