খাঁন মোঃ আঃ মজিদ
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হাসান সরকার ও অন্যান্য পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বাস্তবায়নে গড়িমসি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী ভুক্তভোগী আব্দুল মজিদ খান জানান, একাধিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও থানার পক্ষ থেকে তাদের গ্রেফতারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সূত্রে জানা যায়, ওসি জাহিদ হাসান সরকার পূর্বে ডিবি পুলিশের সদস্য হিসেবে টাঙ্গাইল জেলার একটি থানা এলাকায় কর্মরত ছিলেন। গত জুন মাসের শুরুতে তিনি “সাক্ষ্য দেওয়ার” কথা বলে টাঙ্গাইলে যান। তবে তার সফরের ঠিক আগেই বোচাগঞ্জ থানা থেকে টাঙ্গাইল মির্জাপুর থানার ওসি মশিউর রহমান এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ওসি রিজাউলের নিকট ডাকযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানার ফরোয়ার্ডিং পাঠানো হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, এই ফরোয়ার্ডিং আদতে ছিল একটি কৌশল, যেন মামলার বাদী আব্দুল মজিদ খান বুঝতে না পারেন যে ওসি জাহিদ হাসান সরকার ও অন্যান্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আসামিদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারেন। আরও অভিযোগে বলা হয়েছে, পরোয়ানাভুক্ত আসামি আসা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইলে “জাহিদ ডিবি” নামে একটি নম্বর (01711***210) সংরক্ষিত ছিল। পাশাপাশি আসা আক্তারের ব্যবহৃত আরেকটি নম্বর01790-634460-এর সঙ্গে ওসি জাহিদের যোগাযোগ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।আব্দুল মজিদ খানের দাবি, তার করা ৬টি মামলার মধ্যে ৫টির গ্রেফতারি পরোয়ানা দিনাজপুর আদালত কর্তৃক জারি হয়েছে। এসব মামলার অন্তর্ভুক্ত ৬ জন আসামির মধ্যে চারজন জামিনে থাকলেও, বাকি ৬ জন এখনও টাঙ্গাইল ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে দেশের ৬৪ জেলার পলাতক আসামিদের বোচাগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে, সেখানে নিজের থানার মামলার আসামিদের ধরতে ব্যর্থতা কেন? থানা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এসআই শংকর ও এসআই মাহবুর – দুজনই চাইলেই এসব গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করতে পারতেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, মোটা অঙ্কের ঘুষ বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ভুক্তভোগীর দাবি, পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন –১. আসা আক্তার ২. লিপি আক্তার ৩. রাশিদা আক্তার ৪. মো. নয়ন মিয়া ৫. দেলোয়ার হোসেন ৬. লাইসুর রহমান এদের মধ্যে চারজন জামিনে থাকলেও, ছয়জন পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে। সচেতন মহল বলছে, এই ঘটনায় বোচাগঞ্জ থানার ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, যদি এই অভিযোগ সত্য হয় তবে এটি প্রশাসনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থাকে চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করবে। তারা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন, যাতে আসল সত্য উদঘাটিত হয় এবং অভিযুক্তরা বিচারের মুখোমুখি হয়।
Leave a Reply