রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন

ছাউনি নেই, স্ট্যান্ডে যাত্রীদুর্ভোগ

  • Update Time : রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১১.৫৮ এএম
  • ১৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

  নিজস্ব প্রতিবেদক:-

 

রাজবাড়ীর মুরগির ফার্ম এলাকার বাসস্ট্যান্ড থেকে পাংশা যাচ্ছিলেন রাশেদ আহমেদ নামে এক যাত্রী। হাতে তাঁর ব্যবসায়িক মালপত্র। জানালেন, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তাঁকে প্রায়ই পাংশা-রাজবাড়ী যাতায়াত করতে হয়। বেশির ভাগ সময় বাসেই যাতায়াত করেন। যাত্রীছাউনি না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয় তাঁকে। তাঁর মতো অনেক যাত্রীকেই রোদে পুড়তে হয়, বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।
জানা গেছে, রাজবাড়ী থেকে অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে বাস চলাচল করে। এ রুটগুলো হলো দৌলতদিয়া, ফরিদপুর, বালিয়াকান্দি, কুষ্টিয়া ও ধাওয়াপাড়া। এ ছাড়া ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, যশোর, মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলার বাসও ছেড়ে যায়।
রাজবাড়ী শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও তা ব্যবহৃত হয় না শুরু থেকেই। শহরে মুরগির ফার্ম নামক জায়গায় বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। বড়পুল থেকেও যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়। রাজবাড়ী থেকে মাছপাড়া পর্যন্ত ১৪টি বাস স্টপ রয়েছে। এর মধ্যে পাংশায় একটি যাত্রীছাউনি রয়েছে। বহুদিন ধরে সেটি ব্যবহারের অনুপযোগী। কালুখালীতে একটি যাত্রীছাউনি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন জেলা পরিষদের এক সদস্য সেটি ভেঙে ফেলেন। তারপর সেখানে আর যাত্রীছাউনি হয়নি। এছাড়া আর কোথাও যাত্রীছাউনি নেই।
রাজবাড়ী থেকে বালিয়াকান্দি পর্যন্ত পাঁচটি বাস বে’র একটিতেও যাত্রীছাউনি নেই। রাজবাড়ী থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত ছয়টি বাস বে’র মধ্যে শুধু গোয়ালন্দ মোড়ে যাত্রীছাউনি রয়েছে। সেটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় বহুদিন ধরে পরিত্যক্ত। গোয়ালন্দ মোড় থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত পাঁচটি স্টপের মধ্যে শুধু গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীছাউনি রয়েছে।
রাজবাড়ী মুরগি ফার্ম বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েকটি পরিবহনের টিকিট কাউন্টার ছাড়াও বেশ কয়েকটি দোকানপাট রয়েছে। বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা কেউ দোকানে, কেউ টিকিট কাউন্টারে বসে আছেন। কুষ্টিয়াগামী বাসগুলো ছাড়ছে পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে। সেখানে একটি ছোট টং দোকান রয়েছে। যাত্রীরা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। বালিয়াকান্দিগামী বাস ছাড়ছে নতুন বাজারের সামনের রাস্তা থেকে। সেখানেও যাত্রীর জটলা।
ফরিদপুর ও দৌলতদিয়ামুখী বাসগুলো ছাড়ছে মুরগির ফার্মের ঠিক সামনে থেকে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী আবুল কালাম জানান, তিনি সপরিবার ফরিদপুর যাবেন।। কোথাও বসার জায়গা নেই। তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে এক জায়গায় বসিয়ে রেখে নিজে ঘোরাফেরা করছেন।
মুরগির ফার্ম বাসস্ট্যান্ডে দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া রুটে চলাচলকারী পদ্মা গড়াই বাসের টিকিট বিক্রি করেন ইউসুফ সরদার। তিনি জানান, তাদেরও বসার জায়গা
নেই। এ কারণে একটি দোকানের সামনে বসেছেন টিকিট বিক্রি করতে।
পরিবহন শ্রমিক রেজাউল ইসলাম রূপু বলেন, মুরগির ফার্ম এলাকায় আগে যাত্রীছাউনি ছিল। সেখানে যাত্রীরা বিশ্রাম নিতেন। চার লেন সড়ক হওয়ার সময় যাত্রীছাউনিটি ভেঙে ফেলা হয়। তারপরে আর নির্মাণ করা হয়নি। তিনি জানান, এই বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, পাবনা, কুষ্টিয়া, বালিয়াকান্দি, দৌলতদিয়া, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। এখানে একটি যাত্রীছাউনি থাকা খুবই জরুরি।
রাজবাড়ী জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার সরকার বলেন, একটি বাস বে’তে যাত্রীছাউনি থাকা খুবই দরকার। এ বিষয়ে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
জেলা সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রাজস খান জানান, জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাস বে’গুলোতে যাত্রীছাউনি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION