রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন

চিরশায়িত ছোট্ট রাইসা মনি, মা-বাবার সঙ্গে যেন পুরো গ্রাম কাঁদছে

  • Update Time : রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১১.০৯ এএম
  • ১০ জন সংবাদটি পড়েছেন

  নিজস্ব প্রতিবেদক:-

 

 ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারানো তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ১১ বছরের রাইসা মনিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। ফুটফুটে এই ছোট্ট মেয়েকে হারানোর বেদনায় ডুকরে কেঁদে উঠছেন মা-বাবা।

অবিরত গড়িয়ে পড়ছে অশ্রু। হতবিহ্বল আত্মীয়-স্বজনসহ পুরো এলাকাবাসী। গ্রামজুড়ে যেন শোকের ছায়া।

গতশুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজার নামাজ শেষে বাজড়া কবরস্থানে রাইসা মনির দাফন সম্পন্ন হয়।

শাহাবুল শেখ ও মিম দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে মেঝ ছিল রাইসা। তার জন্মের দুই বছর আগে ওই দম্পতির কোলজুড়ে আসে সিনথিয়া (১৩), আর রাইসার জন্মের ছয় বছরের মাথায় আসে রাফসান শেখ (৪)।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় বসবাস করা রাইসা মনির বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে-মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়ানোর। উচ্চশিক্ষায় সু-শিক্ষিত করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। সেই লক্ষ্যে ভর্তি করেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। রাইসা মনি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো। একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তার বড় বোন সিনথিয়া।

২১ জুলাই দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমানমাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হলে অনেকে হতাহত হয়। কিন্তু রাইসার খোঁজ মিলছিল না। ছয়টি অজ্ঞাত লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। সেজন্য যাদের খোঁজ মিলছিল না, তাদের মা-বাবাসহ স্বজনরা সিআইডিতে ডিএনএ নমুনা দেন ওই অশনাক্ত লাশের মধ্যে নিজের সন্তানকে খুঁজে পেতে। এর মাধ্যমে রাইসা মনিরও লাশ খুঁজে পায় তার পরিবার।

রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, ২২ জুলাই ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন সিআইডি। পরে নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করে আমার মেয়ের রাইসা মনি মরদেহ শনাক্ত করার পর আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই মেয়ের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফ‌রিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আসি। বাড়িতে পৌঁছাতে ভোর হয়ে যায়। শুক্রবার সকাল ৯টায় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজের জানাজা শেষে বাজড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য (মেম্বার) ওবায়দুর রহমান বলেন, রাইসা মনির অকাল মৃত্যুতে পুরো এলাকার মানুষ শোকে বিহ্বল। তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর হৃদয়-বিদারক দৃশ্যর অবতারণা হয়। এমন কোনো মানুষ নেই তার জন্য কাঁদেনি।

সরকারি হিসাবে, বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫১ জন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION