রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশকে আর পুরোনো পথে ফেরত নিতে দেব না: নাহিদ ইসলাম

  • Update Time : শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ৭.১৭ পিএম
  • ৪৩ জন সংবাদটি পড়েছেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্টে আমরা বলেছিলাম, এক নতুন বাংলাদেশ লাগবে। এক নতুন বন্দোবস্ত লাগবে। পুরোনো সিস্টেমে, পুরোনো আইনে আমরা আর এ বাংলাদেশকে পরিচালিত হতে দেব না। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর নানান শক্তি আবার চেষ্টা করছে পুরোনো সিস্টেমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।’

আজ শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের বেরিরপারে এনসিপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে আয়োজিত পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আমরা যখন রাজপথে নেমেছিলাম, আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছে। বোনেরা নির্যাতিত হয়েছে। আমরা এই বাংলাদেশকে আর পুরোনো পথে ফেরত নিতে দেব না।’

পথসভার আয়োজন করে এনসিপি মৌলভীবাজার জেলা শাখা। এতে সভাপতিত্ব করেন এনসিপির মৌলভীবাজারের প্রধান সমন্বয়কারী ফাহাদ আলম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সচিব প্রীতম দাশ প্রমুখ। পথসভায় কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সময় অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম, অনেক দাবি ছিল। কিন্তু সব স্বপ্নকে নির্বাসনে পাঠিয়ে একমাত্র দাবিতে রূপান্তর করে ফেলা হয়েছে। আমরা বলেছিলাম, আমরা নির্বাচন চাই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করা শক্তি, ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করা শক্তি। কিন্তু বিচার সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে। এই নির্বাচন জনগণ গ্রহণ করবে না।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিবিসির একটি রিপোর্ট দেখলাম হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে, যেখানে পুলিশ হত্যাকে প্রমিনেন্ট করে তোলা হচ্ছে। এই পুলিশ হত্যার দায় আমাদের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতাকে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ৩ আগস্ট আমরা এক দফার মাধ্যমে স্পষ্ট করেছিলাম আমাদের এই লড়াইটা শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। শেখ হাসিনার পুলিশ, ছাত্রলীগ, সন্ত্রাসী বাহিনী গুলি চালিয়ে, বর্বরোচিত হামলা করে আমাদের অভ্যুত্থানের দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল। আমরা শান্তিপ্রিয় ছাত্র-জনতা বাধ্য হয়েছিলাম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। লাঠি হাতে তুলে নিতে। বাধ্য হয়েছিলাম ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে। আমরা স্পষ্ট করেছিলাম, এই লড়াইটা ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র, ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণের লড়াই।’

পথসভার আগে মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি পদযাত্রা শুরু করা হয়। পদযাত্রাটি কোর্ট রোড, শাহ মোস্তফা সড়ক হয়ে বেরিরপারে পথসভাস্থলে গিয়ে শেষ হয়। পথসভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

‘৫৪ বছরে আমরা দেশটাকে গড়তে পারিনি’

শ্রীমঙ্গলের মহসিন মিলনায়তনের কনফারেন্স রুমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এনসিপির নেতারা। এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গত ৫৪ বছর আমরা দেশটাকে গড়তে পারিনি। আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারিনি, এবার সুযোগ এসেছে আমরা সেই বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে আমাদের সকল জাতিসত্তার কণ্ঠস্বর থাকবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে চেষ্টা করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু করার। নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করি।’

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেব, অনিক রায়, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম সদস্যসচিব প্রীতম দাশ, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, চা জনগোষ্ঠী আদিবাসী ফোরামের সভাপতি পরিমল সিং বাড়াইক, খাসি জনগোষ্ঠীর নেতা জিডিসন প্রধান সুচিয়াং, মণিপুরি জনগোষ্ঠীর নেতা হিরন্ময় সিংহ প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION