রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

 মধুখালীতে সেনাক্যাম্প ও  পুলিশ সদস্যের অভিযান : মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও অর্থ পাচার চক্রের ৫ সদস্য আটক

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫, ৯.৪৩ এএম
  • ৫৪ জন সংবাদটি পড়েছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফরিদপুরের মধুখালীতে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। ফরিদপুর সেনা ক্যাম্প ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত এ অভিযানে প্রতারকদের কাছ থেকে ইয়াবা, সিমকার্ড ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেনা ক্যাম্প ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযানটি পরিচালনা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেয় ১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন। অভিযান শুরুর আগে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ, আর্থিক লেনদেনের পথ ও চক্রটির অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা হয়।
সেনা সূত্র জানায়, ফরিদপুর সেনা ক্যাম্পে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে বলা হয়, প্রতারক চক্রটি বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ভুয়া কাস্টমার কেয়ার হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট, পিন এবং ওটিপি নম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছিল। পরবর্তীতে সেই অর্থ অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটে খাটিয়ে বিদেশে পাচার করা হতো।
অভিযানে যেভাবে আটক
গত ১৪ জুলাই ভোররাতে মধুখালীর ডোমাইন বাজার এলাকায় প্রায় সাত ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে চক্রের মূলহোতা ও স্থানীয় কুখ্যাত এরপর পৃষ্ঠা ৩, কলাম ৭
মাদক ব্যবসায়ী মো. কামরুল মিয়া (৪০) সহ আরও চারজন-অমরেশ বিশ্বাস (৩০), সোহান মালিক (২৪), হাফিজুর রহমান (৪২) ও শেখ শাকিল আহমেদ (২৬)-কে আটক করা হয়।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১০৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪২টি গ্রামীণফোন সিমকার্ড এবং ১০টি মোবাইল ফোন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিস্ময়কর তথ্য
জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, তারা বিকাশের ভুয়া কাস্টমার কেয়ার সেজে প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ করত। সেই অর্থের ৫০ শতাংশ বিদেশে পাচার করা হতো এবং বাকি অংশ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া হতো। এছাড়া, অবৈধভাবে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট সচল রাখতে তারা ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পূর্ব-নিবন্ধিত সিম সংগ্রহ করত।
তদন্তে আরও জানা গেছে, চক্রটির কার্যক্রম কেবল ফরিদপুরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও ময়মনসিংহসহ দেশের প্রায় সব বিভাগেই তাদের সক্রিয়তা ছিল।
আইনি প্রক্রিয়া চলছে
আটককৃতদের মধুখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, সাইবার অপরাধ দমন আইন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সেনাবাহিনীর ‘জিরো টলারেন্স’ বার্তা
সেনা সূত্র জানিয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, ডিজিটাল লেনদেন এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনী প্রতারণা, অর্থপাচার, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে অটল রয়েছে। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে নাগরিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION