সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন

হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে সড়কের কার্পেটিং,কর্তৃপক্ষ বলছে অভিযোগ মিথ্যা 

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫, ১০.১৫ এএম
  • ১৪৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, আলফাডাঙ্গা
জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। দায়িত্ব দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। কাজও শুরু হয় সড়ক সংস্কারের। কিন্তু কাজ হওয়ায় দুইদিন যেতে না যেতেই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে সেই সড়কের কার্পেটিং।
ফরিদপুরের  আলফাডাঙ্গা  উপজেলার পাচুড়িয়া  ইউনিয়নের গত রোববার   একটি সড়ক সংস্কারের চলমান কাজে এমন অবস্থা। সংস্কার কাজ শুরু হতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।গাড়ি চাকার ব্রেক ধরলে ঘষাতে,এরপর ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে যে কেউ হাত দিয়ে টান দিলেও কার্পেটিং উঠে আসছে। এ অনিয়মের ছবি ও ভিডিও  ফেসবুকে পোষ্ট দিলে ব্যাপক সমালোচনা ও ভাইরাল হয়।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,পাচুড়িয়া ইউনিয়নে ভেন্নাতলা  থেকে বেড়ির হাট বাজার  পাকা সড়ক  উন্নয়নের ৩৭০০ মিটার কাজটি ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা,১৩০০ মিটারে ১০ ফুট  চওড়া,২৪০০ মিটারে ১৩ ফুট চওড়া চুক্তিমূল্যে পান মাহামুদ ট্রেডার্স প্রতিষ্ঠান- ফরিদপুর  নামে মাহামুদ  ঠিকাদার।১৪ জুন বিকেলে কাজ শুরু করেন।  কাজটির দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল রাজ্জাক রাসেল ।
অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সড়কের এই দশা। স্থানীয় এলজিইডির গাফিলতির কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজ করেছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, সড়কের কাজে মানহীন ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। সঠিক তদারকির অভাবে যেনতেন ভাবে কাজের ফলে  বর্ষা মৌসুমেই এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
 খোঁজনিয়ে জানা যায়,পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারি উপজেলা ভাটপাড়া ইকরাম হোসেনের ইট ভাটায় কার্পেটিং কাজের প্লান্ট মেশিনে মালামাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেখান থেকে  চলমান প্রকল্পের দূরত্ব হবে  ১৫ কি.মি. কাছাকাছি, রাস্তায় নেই  কোন সাইনবোর্ড, যেখানে সাইনবোর্ড বাধ্যতামুলক।যে কোন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তাদের অবগত করা যায়।
সরেজমিনে উপজেলার পাচুড়িয়া  ইউনিয়নের ভেন্নাতলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার কার্পেটিং বিভিন্ন জায়গায় উঠানো। ছোট্ট বাচ্চাদের দেখা যায় কার্পেটিং তুলে খেলা করছে। স্থানীয়রা বলেন, গত ১৪ জুন থেকে রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। শুরু থেকে ধুলাবালু ঠিকমতো পরিষ্কার করেননি, রাস্তায় বিটুমিনের আবরণ নেই। এর মাঝে বৃষ্টির মধ্যে সড়কটিতে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। বাধা উপেক্ষা করে অফিসের লোকজনকে ম্যানেজ করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রাখেন।
পিকাপ বোঝাই ড্রাইভার  সাগরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে। কতটা দুর্নীতি ও অনিয়ম হলে সড়কটির এমন পরিণতি হয়। সড়কটি সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে।’
রাস্তার কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল রাজ্জাক রাসেল প্রতিবেদককে  বলেন,আমরা সঠিক নিয়মে কাজ করছি।এলাকাবাসীর দাবী প্রাইম কোড মেরে সাথে সাথে কাজ করতে হবে।তাহলে রাস্তায় পিচ উঠে যাবে।সাদা পাথরের অভিযোগে ভিত্তিতে বলেন, মিক্সিং মালের মেশিনের পাশ দিয়ে  দুই চারটা সাদা পাথর পরে তাতে কাজের গুণগত মান নষ্ট হয় না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মাহামুদ  সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে বলেন,রাহাত ভাইয়ের হাতে  ১০০% না ১১০% হারে কাজ করছি। এলাকার লোক পিচের নিচে সাবল ঢুকিয়ে রাস্তা নষ্ট করেছে,ভাল মানের করা রাস্তা নষ্ট হওয়ার প্রশ্নই আাসে না ।আমি তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রাহাত ইসলাম প্রতিবেদককে  বলেন,জুন ফাইনালে অফিসে ব্যস্ত থাকায় আমার উপসহকারী কাজ করছে।অফিসের লোকজনকে ঐ এলাকায়  তিন চারশত লোকজন ঘিরে হেনেস্তা, মারধর,  অপমান ও মটর সাইকেল আটক  করার সংবাদ পেয়ে সেখানে যাই।তাদের অভিযোগ সত্য নয়।রাস্তার গুনগত মান ঠিক আছে। কার্পেটিং শক্ত হতে হলে ৭২ ঘন্টা সময় দিতে হবে।আর ঠিকাদার  ত্রুটি করলে আমাদের কাছে অভিযোগ করবে আমরা পূনরায় কাজ করাবো।কাজ করতে গেলে যদি না  বুজে অপমান লাঞ্ছিত করে, তাহলে আমাদের জীবনের নিরাপত্তার অভাবে কোন কাজ করতে পারবো না।
ফরিদপুর  এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান খান প্রতিবেদককে  বলেন, ঐ এলাকার লোক কোদাল দিয়ে উঠিয়ে ফেলছে।আমি দুই বছর ধরে জানি আমার উপজেলা  অফিসার সৎ অফিসার।আজও ঐ খানে আমার অফিসার ও ইউএনও গিয়েছে।আপনারা ঐ জায়গায় গিয়ে খোঁজখবর নেন এবং ওদের বিরুদ্ধে  লেখেন।অনিয়মের কথা প্রশ্ন করা হলে আরোও বলেন আপনার যেটা লেখার সেইটাই লিখবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION