আরিফুজ্জামান চাকলাদার, আলফাডাঙ্গা
আলফাডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিনকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সিভিল পোশাকে গ্রেফতার করে থানায় নেয়ার পর মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে তিনি ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে থানার ওসি হারুন অর রশিদকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
সোমবার ১২ মে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি সিভিল টিম তাকে পৌর বাজার এলাকা থেকে প্রকাশ্যে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে থানার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সেলে রাখা হয় বলে জানা গেছে। তবে দুপুর ৩ টার পর থেকে থানায় তার আর খোঁজ মেলেনি।
নাসির উদ্দিন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাকাইল গ্রামের মৃত আব্দুস সালাম উদ্দিনের ছেলে। তার ছোট ভাই আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
বাজারের প্যাথলজি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সুজা বলেন, “সকালবেলা নাসিরকে গ্রেফতার করে আমার চোখের সামনেই থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু দুপুর ৩ টার পর শুনি নাসির থানায় নেই। এরপর তার অসুস্থ বড় ভাই নওয়াব আলী থানায় গিয়ে খোঁজ নিতে গেলে তাকেই আটক করে রাখা হয়।”
পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বাশারুল বারী বলেন, “নাসিরের ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম ছিলেন শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা। আওয়ামী লীগ আমলে তারা এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে জমি দখল, চাকরি বাণিজ্য চালাতো। আজ নিজেরাই ভুক্তভোগী—কিন্তু পুলিশের হেফাজত থেকে কেউ এভাবে নিখোঁজ হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
পরে অবশ্য নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে পরিবারের দাবি, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তিনি থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাসির উদ্দিন একজন ব্যবসায়ী। আলফাডাঙ্গা পৌরসভার বাকাইল সড়কে তার টিনের দোকান রয়েছে। সোমবার দুপুরের দিকে তার নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি থানা থেকে কৌশলে পালিয়ে যান। নাসির উদ্দিনের ছোট ভাই তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাই রাজনীতি করেন এটা ঠিক। কিন্তু তিনি কোনো মামলার আসামি না। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার ভাইকে পুলিশ থানায় নেওয়ার পর তিনি ভয় পান এবং থানা থেকে পালিয়ে যান। পরে আমার আরেক ভাইকে আটক করে পুলিশ। পরে আমাদের সিদ্ধান্তে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এখন তিনি থানায় আছেন।’
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র পাইনি।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, নাসির উদ্দিন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সোমবার তাকে আটকের পর থানা থেকে কৌশলে পালিয়ে যান। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ থেকে তাকে ধরে আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে আমাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত থানায় কাউকে ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আমাকে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতেই আলফাডাঙ্গা ছেড়ে পুলিশ লাইনসে যোগদান করবো।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা সার্কেল) ইমরুল হাসান বলেন, আমি স্টেশনের বাইরে আছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত বলতে পারবো।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
