ঢাকামঙ্গলবার , ৮ এপ্রিল ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. টপ নিউজ
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বিনোদন
  10. রাজনীতি
  11. লাইফস্টাইল
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সম্পাদকীয়
  15. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিছু হলেই ককটেল ফোটে, ২৫ বছরে ঝরেছে ৭ প্রাণ; কারা বানায় এই ককটেল

Doinik Kumar
এপ্রিল ৮, ২০২৫ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বালতিতে করে ককটেল নিয়ে ‘খইয়ের মতো’ ফুটিয়ে দেশজুড়ে এখন আলোচনায় শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাশপুর। এখানে কিছু থেকে কিছু হলেই ককটেল ফোটানো হয়। গত ২৫ বছরে ককটেল বিস্ফোরণে এখানে প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। আহত হয়েছেন কয়েক শ বাসিন্দা।

তবে বিরোধ আরও পুরোনো। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অন্তত ৪০ বছর ধরে এখানকার দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতা চলছে। বিলাশপুর ইউনিয়নের ২১ গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে এই বিরোধ।

বর্তমানে এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী, আরেক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবর। তাঁদের বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় ককটেল বোমা তৈরি করেন, এমন অভিযোগ আছে।

১৯৮৪ সালে ইউপি নির্বাচনের পর বিলাশপুরে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ ওরফে মেছের মাস্টার ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একটি হত্যা মামলায় আবদুল লতিফ দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর এবং আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর ২০০৯ সালের দিকে ওই দুটি পক্ষের নেতৃত্ব চলে যায় কুদ্দুস ব্যাপারী ও জলিল মাদবরের কাছে।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, ওই দুই পক্ষকে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক ও ইকবাল হোসেন নানাভাবে সমর্থন দিতে থাকেন। তাঁদের সমর্থন পেয়ে পক্ষ দুটি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে। দুই পক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠে। তাঁরা নৌপথে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য এনে এলাকায় বসে ককটেল বোমা তৈরি করেন। এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখার জন্য তাঁরা বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ ও হামলা-পাল্টাহামলার ঘটনায় জড়ান। তখন ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করা হয়। এরপর প্রতিপক্ষের সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

এর মধ্যে ওই দুই পক্ষ গতকাল শনিবার সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের সমর্থকেরা শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। তাতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মারুফ মাল (২৫) নামের এক ব্যক্তির হাতের কবজি উড়ে যায়। আর হাসান মুন্সি (৫০) নামের এক ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।

গত বছর ককটেলের আঘাতে নিহত হন সজীব মুন্সি। তাঁর মা নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করেন, কুদ্দুস ব্যাপারী তাঁর ভাই ও ভাইয়ের ছেলেদের দিয়ে ককটেল তৈরি করেন। ওই ককটেল নিরীহ মানুষের বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাঁদের ককটেলের আঘাতে তাঁর ছেলে প্রাণ হারিয়েছেন। ছেলের শিশুপুত্র ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি এখন অসহায় জীবনযাপন করছেন।

গত বছর বিলাশপুরের মুলাই ব্যাপারীকান্দি এলাকায় সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সৈকত সরদারের মা শাহানাজ আক্তার দৈনিক কুমারকে বলেন, তাঁর দুই ছেলে মালয়েশিয়া থাকেন। ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি গ্রামে থাকতেন। জলিল ও কুদ্দুসের সমর্থকদের মধ্যে গ্রামে মারামারি হয়। ওই সময় তাঁর ছেলে সৈকত দূর থেকে ভিডিও করছিলেন। তাঁর ওপর একটি ককটেল পড়ে বিস্ফোরিত হয়। তাঁকে চিকিৎসা করাতে ঢাকায় নেওয়া হয়। তবে বাঁচানো যায়নি। ওদের কারণে না জানি কত মায়ের বুক খালি হবে!

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিলাশপুর বাজারের এক ব্যবসায়ী  বলেন, পুরো ইউনিয়নের মানুষ দুটি পক্ষে বিভক্ত। যেকোনো ঝগড়া, কথা–কাটকাটি হলেও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মানুষকে আতঙ্কিত করে বাড়িঘর ও গবাদিপশু লুটপাট করা হয়। ককটেল তৈরি করার জন্য দুই পক্ষেরই দক্ষ কারিগর আছে। তাঁরা নৌপথে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বিস্ফোরকদ্রব্য এনে এলাকায় বসে ককটেল বোমা তৈরি করেন।

কুদ্দুস ব্যাপারী শনিবার রাতে র‌্যাব–৮–এর একটি দলের হাতে আটক হয়েছেন। আর একটি হত্যা মামলায় জলিল মাদবর কারাগারে আছেন। এ কারণে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

শনিবারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে তাঁদের সমর্থক ও আত্মীয়স্বজনেরা এই মুহূর্তে আত্মগোপনে আছেন।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ দৈনিক ‍কুমারকে বলেন, বিলাশপুরে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষ আধিপত্য বিস্তারের জন্য লড়ছে। দুই পক্ষই বিভিন্ন ঘটনার সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই ককটেল ও বিস্ফোরকদ্রব্যের উৎস জানার জন্য পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিট কাজ করছে। বিলাশপুরে ককটেল তৈরির জায়গাগুলো শনাক্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।