মোঃ মেজবাহ উদ্দিন, চরভদ্রাসন
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট শেখ ইছাহাক মিয়া গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে বিবাদী পক্ষের আমানতি সাড়ে ৬ লাখ টাকা আতœসাত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সালিশ সভাপতির দুই সহচর শেখ নুরুদ্দিন (৫২) ও শেখ মোসলেম উদ্দিন (৫০) মিলে প্রতিপক্ষের বিরোধ মিমাংষার অজুহাতে সম্প্রতী আরও ১২ লাখ টাকা দাবী করে চলেছে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
মাত্র ক’মাস আগে সালিশ বৈঠকের ওই সভাপতি দু’পক্ষের বিরোধ মিমাংষার জন্য বিবাদী পক্ষকে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দায়ধারা করে সব টাকা নিজের কাছে আমানত রাখার পর সবার অজান্তে বাদী পক্ষকে দিয়েছেন মাত্র ৭ লাখ টাকা। ফলে ঘটনার ক’মাস পর বাদী পক্ষ বাকী টাকা আদায়ের জন্য বিবাদীর নামে পূনঃবার মামলা দিয়েছেন বলে জানা যায়। এতে ভুক্তভোগী বিবাদী পক্ষ দ্বিতীয় দফায় অর্থদন্ডির শিকার হয়ে চরভদ্রাসন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ অভিযোগের তদন্ত অফিসার চরভদ্রাসন থানার এসআই ওয়াসেক হাসান রবিবার এ প্রতিবেদককে জানান, “ সালিশে দায়ধারার আমানতি সব টাকা মনে হয় সভাপতি বাদী পক্ষকে দেয় নাই। এ ব্যপারে আরও তদন্তের জন্য আগামী ১২ এপ্রিল সালিশ পক্ষ ও বিবাদী পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে”। আর গত দু’দিন ধরে উপজেলা আ’লীগের সভাপতির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার জন্য বহুবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নাই। এমনকি, উপজেলার চরসুলতানপুর গ্রামে তার বাড়ীতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায় নাই।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, উপজেলার ছোট গাজীরটেক গ্রামের শেখ আলমগীর হোসেন সৌদী প্রবাসী ছেলে শেখ মিরাজ (৩৫) প্রায় ছয় মাস আগে ছুটিতে বাড়ীতে আসে। বাড়ীতে আসার কালে সৌদীর রিয়াদ থেকে মিরাজের কাছে আনার আবু সাঈদ নামক তার এক প্রবাসী বন্ধু কিছু স্বর্ণালঙ্কার স্বজনদের জন্য দেশে পাঠায়। শেখ মিরাজ উক্ত প্রবাসী বন্ধুর কাছে ভিসা ক্রয় বিক্রয়ের প্রায় ৫ লাখ টাকা পাবে বলে প্রবাসী আনার আবু সাঈদের পাঠানো স্বর্ণালঙ্কার আটকে দেয়। এ নিয়ে গত ডিসেম্বর মাসে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট শেখ ইছাহাক মিয়ার চরসুলতানপুর গ্রামের বাড়ীতে তার সভাপতিত্বে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ সালিশের বাদী ছিলেন সৌদী প্রবাসী আনার আবু সাঈদের দুলাভাই আমির হোসেন। বিবাদী ছিলেন ছুটিতে বাড়ীতে ফেরা মিরাজের পিতা শেখ আলমগীর হোসেন। এ সালিশ বৈঠকে বিবাদী শেখ আলমগীর হোসনকে স্বর্ণালঙ্কার মূল্য ১৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা সভাপতির কাছে জমা দিতে বলা হয়।
বিবাদী আলমগীর হোসেন জানায়, “সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে, আমি দুই কিস্তিতে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেছি। কিন্তু সালিশ সভাপতি এ্যাডভোকেট শেখ ইছাহাক মিয়া ও তার দোসর শেখ নুরুদ্দিন ও শেখ মোসলেম উদ্দিন মিলে বাদী পক্ষকে দিয়েছে মাত্র ৭ লাখ টাকা (ভিডিও চিত্র সংরক্ষিত আছে)। বাকী টাকা উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও তার দোসররা মেরে দিয়েছে। ফলে স্বর্ণালঙ্কার মালিক প্রবাসী আনার আবু সাঈদ তার পাওনা আরও ৭ লাখ টাকা দাবী করে সৌদীতে শেখ মিরাজের নামে পূনঃবার মামলা করেছেন। এতে শেখ আলমগীর হোসেন ও তার ছেলে দ্বিতীয় দফায় অর্থদন্ডির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন”।
আর উক্ত সালিশ সভাপতির দোসর শেখ নুরুদ্দিন জানায়, “শেখ মিরাজের কাছে যেসব স্বর্ণালঙ্কার পাঠানো হয়েছিল তার মূল্য আসে প্রায় ২৪ লাখ টাকা। আমরাতো মাত্র সাড়ে ১০ লাখ টাকা দায় ধারা করে আপোষ মিমাংষার ফয়সালা করেছিলাম। বাদী পক্ষ এখন আবার মামলা করলে আমরা কি করবো”।
Leave a Reply