ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে এক দশক আগে ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র আয়াজ হক হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডিত দুই আসামির সাজা কমিয়েছেন হাইকোর্ট।
দুজনের আপিল শুনানি শেষে রোববার (১৫ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে আমৃত্যু দণ্ডিত ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসানকে ১২ বছর এবং যাবজ্জীবন তৌহিদুল ইসলাম শুভকে ১০ বছর দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দুই আসামির করা আপিল খারিজ এবং সাজা সংশোধন করে এ রায় দেওয়া হয়। আদালতে তৌহিদুলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন এবং জিসানের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার ও সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৯ জুন ঢাকা সিটি কলেজের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও খরচ বাবদ টাকা তোলা নিয়ে আয়াজের বড় ভাই ওই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র আশদিন হকের সঙ্গে আসামিদের কথা কাটাকাটি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
ওইদিন বিকেলে জিগাতলা যাত্রী ছাউনির কাছে আয়াজকে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে আসামিরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আয়াজের বাবা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শহীদুল হক ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৩ মে ধানমণ্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাহিদুল বিশ্বাস আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছর ২৪ নভেম্বর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। বিচার শেষে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামিদের মধ্যে ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসানকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। আর তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান আরাফ, তৌহিদুল ইসলাম শুভ, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেন রিগ্যানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জিসান এবং তৌহিদুল ইসলাম শুভ। আর অন্য আসামিরা পলাতক।
Leave a Reply