মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:০৮ অপরাহ্ন

প্রিজন সেলে জামাই আদরে আ. লীগ নেতা, করছেন বৈঠক!

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ১২.১২ পিএম
  • ১৩১ জন সংবাদটি পড়েছেন

খুলনা: খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক, সিটি করপোরেশনের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং খুলনা তিন আসনের সাবেক এমপি মুন্নুজান সুফিয়ানের আপন ভাগনে শেখ খালিদ আহমেদ (৪৫) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে কাশিপুর নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওই দিন বিকেলে নগরীর খালিশপুর থানার পদ্মা অয়েল রোডে খালিদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় খালিদ একতলা বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন তার ডান পা ভেঙে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। তাকে দেওয়া হচ্ছে ভিআইপি সুবিধা বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রিজন সেলে খালিদ আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এমন দাবি করেছে।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে তার অনুসারী নেতাকর্মী নিয়ে প্রিজন সেলে রীতিমতো রাজনৈতিক বৈঠক চালাচ্ছেন। পুলিশ প্রহরায় সহযোগীদের দিয়ে করাচ্ছেন সেবা-শুশ্রুষা। তার পাহারায় রয়েছেন নাশকতা মামলার আসামি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা।

বুধবার দুপুরে প্রিজন সেলে গিয়ে দেখা যায়, কমপক্ষে অর্ধশত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও খালিদ হোসেনের আত্মীয় স্বজনকে সেলের বাইরে পাহারা দিচ্ছে। পুলিশি পাহারায় আসামির সাথে বসে গল্প করছেন ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এনাম মুন্সী। ওই প্রিজন সেলের পৃথক কক্ষে আরও কয়েকজন আসামি রয়েছেন। সেসব কক্ষে আসামিদের দেখার মতো কেউ নেই। অথচ প্রিজন সেলের ভেতরেই খালিদ হোসেনের কক্ষে মানুষ ভর্তি। এই নিয়ে অন্য আসামিরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রিজনসেল থেকে বের হচ্ছেন সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এনাম মুন্সী।

প্রিজনসেল থেকে বের হচ্ছেন সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এনাম মুন্সী।

প্রিজন সেলের কক্ষের বাইরে ডিউটিতে ছিলেন পুলিশ সদস্য রেজাউল ইসলাম। সেলের ভেতরে এত মানুষের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই শামিম রেজার সাথে ফোনকলে কথা বলতে চাইলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্য রেজাউল করিম মারমুখি আচরণ করেন।

এদিকে খালিশপুর থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ নেতা এনাম মুন্সীর নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, খালিদের বিরুদ্ধে বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগে খালিশপুর থানায় তিনটি এবং খুলনা সদর ও আড়ংঘাটা থানায় একটি করে মামলা রয়েছে। এনাম মুন্সীর বিরুদ্ধেও একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে। তাকে পুলিশ খুঁজছে।

এদিকে প্রিজন সেলে জামাই আদরে আওয়ামীলীগ নেতা খালিদের বৈঠক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, চোর ও সন্ত্রাসীরা কারাগারে যেভাবে ভিআইপি প্রোটোকল পাচ্ছে তা জুলাই চেতনা পরিপন্থি এবং আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক৷

অভ্যুত্থান বিরোধী এই অপশক্তির যেখানে রিমান্ডে থাকার কথা তারা সেখানে প্রিজন সেলে বসেই নাকি বৈঠক করছে! কি নিয়ে বৈঠক হচ্ছে আমরা জানি না! তারা কি আবার আমাদের ওপর গুলি চালাতে চায়? আমাদের মারতে চায়? কি চায় তারা? কারা এই বৈঠকের আয়োজক এবং সহযোগী, কাদের ইন্ধনে এসব বৈঠক হচ্ছে তাদের খুঁজে বের করুন৷ অন্যথায় বিপ্লবী ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবে৷

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION