শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন

বাসে ডাকাতি-‘শ্লীলতাহানি’র ঘটনায় বড়াইগ্রামের ওসি প্রত্যাহার

  • Update Time : শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১১.০৪ এএম
  • ১৩৫ জন সংবাদটি পড়েছেন

নাটোর

নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ঢাকা–রাজশাহী রুটে একটি চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ‘শ্লীলতাহানি’র ঘটনায় অবহেলা এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করাসহ প্রশাসনিক কারণে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

বিকেলে বড়াইগ্রাম থানা পরিদর্শনে আসেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহম্মদ শাহজাহান। তিনি ডাকাতি-শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওসিকে তাৎক্ষণিকভাবে থানা থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

রাতে নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

সোমবার মধ্যরাতে ইউনিক রোড রয়েলসের ওই বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তখন দুই নারী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় হওয়া মামলার এজাহারে বিষয়টি যৌন নিপীড়ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বাসের ভুক্তভোগী যাত্রী ও নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা ওমর আলী এই মামলার বাদী। তার বর্ণনামতে, শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।

তিনি জানান, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছেড়ে আসে। সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি করে বাস থামিয়ে ডাকাতদল নেমে যায়।

ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করেন চালক। মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর যাত্রীরা বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান।

এ সময় ডাকাতিতে জড়িত সন্দেহে বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও হেলপার মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। পরে তারা আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পান।

আরও পড়ুন: চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ‘শ্লীলতাহানি’র তিন দিন পর মামলা

বুধবার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অবশেষে ঘটনার তিনদিন পর শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় ওমর আলীর মামলা নেওয়া হয়।

বাসটি সেদিন বড়াইগ্রামে পৌঁছার পর মজনু আকন্দ নামে এক যাত্রী জানিয়েছিলেন, ঢাকা থেকে বাস ছাড়ার পর এক পর্যায়ে ডাকাতেরা ছুরি ও পিস্তল নিয়ে বাসের চালকসহ সবাইকে জিম্মি করে। এ সময় ডাকাতরা বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নেয় এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানা এলাকার ফাঁকা স্থানে নেমে পালিয়ে যায়।

ওই যাত্রী আরও বলেন, বিষয়টি মির্জাপুর থানায় জানানো হলেও তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে চালক বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিতে বাধ্য হন। যাত্রীদের কাছে ডাকাতির বর্ণনা শুনে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ চালক, হেলপার আর সুপারভাইজারকে আটক করে করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায়।

তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সময়মতো জানাননি বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হলো।

ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় সেবা নিতে গিয়ে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। ওসি সময়মতো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেননি।

তিনি বলেন, পুলিশের কাছে সেবা না পাওয়া দায়িত্বে অবহেলা। এ কারণে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের কাছে বিষয়টি নিয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে এবং সাময়িকভাবে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION