নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! ‘জঙ্গি তত্ব’ ফেরি করে টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে বেছে নিতে হলো সেই ‘জঙ্গি স্টাইলই’। এনিয়ে তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অন্যদিকে, নিশিরাতের ভোটের পর নিশিরাতে হরতাল পালনের ইতিহাস গড়ে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে দলটির আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পূর্বঘোষিত হরতাল কর্মসূচি ছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের। গণহত্যা চালিয়ে হাসিনার ভারত পালানোর পর আওয়ামী লীগের এটা ছিল দ্বিতীয় হরতাল। অথচ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাধারণ মানুষ তা টেরই পায়নি। জনরোষ থেকে বাঁচতে বিদেশ পালিয়ে গেছে দলটির বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা। দেশে থাকা বাকি নেতাকর্মীরাও রয়েছে আত্মগোপন। এমন অবস্থায় গায়েবি কর্মসূচি দিয়ে ফেসবুকে ট্রলের শিকার ফ্যাসিস্টরা।
জানা যায়, হরতালের আগের দিন রাতে মানুষ মধ্যরাতে যখন গভীর ঘুমে নিমগ্ন তখন হাস্যকর এই কর্মসূচি পালন করা হয়।তাই কেউ টেরই পাননি যে দেশের কোথাও হরতাল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তবে ফেসবুকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পোস্ট দেখে কেউ কেউ বুঝতে পারেন নিশিরাতের ভোটের মতোই আগের রাতেই হরতাল কর্মসূচি পালিত হয়ে গেছে।
গেল ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ভারত পলাতক শেখ হাসিনা ফেসবুকে বক্তব্য দেয়ার পর গভীর রাতে সারাদেশে হরতাল সমর্থনে মশাল মিছিল বের হয়। সাতক্ষিরার মেটেপথে মিছিলে দেখা যায়, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি স্টাইলে ৬ জন মানুষ বোরকা পরে মুখ সম্পূর্ণ ঢেকে মশাল নিয়ে মিছিল করছেন।
চট্টগ্রামের জামালখান, ফরিদপুরের সালনা, ঢাকার মিরহাজির বাগ, নারায়ণগঞ্জের বালুরমাঠ, রুপগঞ্জ, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, বান্দরবানের জঙ্গল, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, ভোলা, পটুয়াখালি, ফেনিসহ কিছু জেলায় নিষিদ্ধ সংগঠনের মতো প্রায় একই স্টাইলে মিছিল করে। মিছিল মানে গভীর রাতে ৫ থেকে ২০ জন মানুষ হাতে জলন্ত মশাল নিয়ে জনমানবহীন জঙ্গলের ধারে, ক্ষেতের জমির আলে, গ্রামের কাঁচা রাস্তায়, জঙ্গলের ধারে, বনের ভিতরের পায়ে হাঁটা সরু পথে মিছিল করেছে।
আওয়ামী লীগের এই মিছিল সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেও হরতাল জনজীবনে কোনো প্রভাব ফেলেনি। গভীর রাতে শেয়ালের মতো আওয়ামী লীগের এই ডেভিলরা হরতালের সমর্থনে তথাকথিত মিছিল করছে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ আইন শৃংখলা বাহিনী ডেভিল ধরতে পারছে না? এনিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে হরতালের সমর্থনে কালিগঞ্জ আওয়ামী লীগ জঙ্গি স্টাইলে (মুখে কাপড় বেধে) ঝটিকা মিছিল করেছে। বনজঙ্গলে শ্যুটিং করা ভিডিও দিয়ে আওয়ামী লীগ বোঝাচ্ছে তাদের জনবল আছে, হরতাল চলছে। জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি এটা আগে বোঝা উচিত।
রাকিব আল হাসান লিখেছেন, মানে এই দিনও দেখতে হবে…! সারাদেশ বাদ দিলাম কিন্তু গোপালগঞ্জে লীগের হাতে গোনা কয়েকটা লোক, টাও ঘোমটা দেওয়া…! হায়রে চেতনা..! আওয়ামী লীগ কোনো নেতাকর্মী তৈরি করতে পারেনি…. এটা তার প্রমাণ।
মোহাম্মদ তারিফ লিখেছেন, আগে দেশে হিরো আলমের অভিনয় দেখে মানুষ হাসতো এখন আওয়ামিলীগের ভিডিও দেখে হাসে।তফাৎ শুধু সময়ের। মারুফ লষ্কর লিখেছেন, নিশি রাতের ভোটের পর নিশি রাতের হরতাল।
নাজিম উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, এর নাম হরতাল নয় ফাইজলামো। এসব চোরের মত ছবি ছারা, তিন ছেরি নিয়ে ঝোড়ের মধ্যে মিছিল করে দেখাচ্ছেন। এসব করে আরো সাধারণত নিরিহ কর্মীগুলোকে বিপদে ফেলছেন। চিটারের মতো কোথাকার বা কোথাকার কবেকার ভিডিও এডিট করে দেখাচ্ছেন, এসব দেওয়ার আগে নেতাদের বিদেশ থেকে দেশে আসতে বলেন। দেশীয় যারা আছে প্রচুর মাল কামিয়েছে তাহাদের রাজপথে নামতে বলেন। যাহারা বিদেশে না গিয়ে দেশেই আছে তাদের সরাসরি কর্মীদের নিয়ে মাঠে আসতে বলেন।
Leave a Reply