নিজস্ব প্রতিবেদক, আলফাডাঙ্গা
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেছেন জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খান মোনায়েম হোসেন।
মঞ্চে ওই সময় আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন-অর রশীদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য দাবিদার রইসউদ্দিনসহ মো: মুআজের নামের আরেক যুবককে দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগের দিন রোববার বিকেলে আলফাডাঙ্গায় উপজেলা পরিষদের হলরুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তারুণ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত করে কেরাত প্রতিযোগিতা, ইসলামী সঙ্গীত ও মেহেদী ডিজাইন স্কিল (শুধু মেয়ে) প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পরে বিচারকদের মাধ্যমে প্রতি গ্রুপ থেকে সাতজন করে মোট ২১ জনকে ক্রেস্ট, সনদ ও আকর্ষণীয় পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে মুসফিক, রজিন ইসলাম, মো: মনিরুল, মাছুরা রহমান, মো: তালহা, তাসনিম নামে কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, রইসউদ্দিন আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের ৮ নম্বর মিঠাপুর পৌর সদরের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র। নিজেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন প্রতিনিধি দাবি করে কমিটি গঠন করে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রইস উদ্দিন বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলফাডাঙ্গা টিম রোববার উপজেলা হল রুমে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সেখানে আমরা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে দাওয়াত করিনি। অভিভাবক হিসেবে অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন। আপনারা সাংবাদিকরা এ ঘটনাকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করবেন না।
তবে ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিরা জানান, আলফাডাঙ্গা কিংবা ফরিদপুরের অন্য কোনো উপজেলাতে তাদের কোনো কমিটি গঠন হয়নি। আন্দোলনের সময় অনেকের সাথে যোগাযোগ হতো। তবে আলফাডাঙ্গায় কারোর সাথে আগে পরে কোনো যোগাযোগ হয়নি জেলাভিত্তিক প্লাটফর্মের।
ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে যোগ দেয়া ফরিদপুরের শিক্ষার্থীদের ছাত্র প্রতিনিধি কাজী রিয়াজ জানান, ঢাকার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সাথে তারা যোগাযোগ রেখে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। পরে বিভিন্ন সময়ে তাদের চারজনের একটি প্রতিনিধি তালিকা প্রশাসনের কাছে দেয়া হয়েছে। তবে জেলায় আসলে এখন পর্যন্ত কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। একইভাবে উপজেলাতেও আমরা কোনো কমিটি করিনি। এই সুযোগে কেউ কেউ নিজেদের মতো ব্যানার করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নাম ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, আমরা ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের উপর হামলাকারীদের নেতৃস্থানীয়দের এখন পর্যন্ত আইনের আওতায় আনতে পারিনি। আর এখনই যদি কেউ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কাউকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে সেটি কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জানা যায়, গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খান মোনায়েম হোসেন ২০২৩ সালে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার অভিযোগে আলফাডাঙ্গা থানায় গায়েবি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তবিবুর রহমান নামে একজন বিএনপি নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে। এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনুষ্ঠানে সেই আওয়ামী লীগের নেতাকে দেখতে পেয়ে উপজেলায় নানা ধরনের কথা চালাচালি শুরু হয়েছে।
Leave a Reply