শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৪১ অপরাহ্ন

চরভদ্রাসন পদ্মায় যত্রতত্র কারেন্ট জালে নীধন হচ্ছে জাটকা ইলিশ জাটকা ইলিশে ছয়লাব হাট-বাজার

  • Update Time : সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৬.৪১ পিএম
  • ২২০ জন সংবাদটি পড়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চরভদ্রাসন

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে যত্রতত্র নীধন করা হচ্ছে জাটকা ইলিশ। গত ক’য়েক দিন ধরে উপজেলা পদ্মা নদীতে কারেন্ট জাল ছাড়াও বড় বড় বেড়জাল দিয়ে অবাধে নীধন হচ্ছে জাটকা। সম্প্রতী উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সাথে সাথে পদ্মা নদী হয়ে ওঠেছে যেন অসাধু জেলেদের অভয়ারণ্য। প্রতিদিন সন্ধার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত কারেন্ট জাল আর ট্রলার নিয়ে পদ্মার বুক জুড়ে চোষে বেড়াচ্ছে শত শত জাটকা শিকারী। সকাল হলেই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মনে মন জাটকা ইলিশ। আর দেশের এ মৎস্য সম্পদ ধ্বংসযজ্ঞ দেখেও না দেখার ভান করছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
সোমবার এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন জানান, “আমার নতুন পোষ্টিং হয়েছে। গতকাল প্রথম যোগদান করেছি। অচিরেই পদ্মায় জাটকা নীধন বন্ধ করা হবে”। একই দিন উপজেলা মৎস্য অফিসার নাঈম হাসান বিপ্লব বলেন, “খুব শীগ্রই উপজেলা পদ্মা নদীতে জাটকা নীধনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। দেশে জাটকা সংরক্ষনের জন্য আমরা স্থানীয় সাংবাদিক সহ সকলের সহায়তা কামনা করছি”।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, চলতি শুস্ক মৌসুমে উপজেলা পদ্মা নদীর জলমহালের প্রচুর পরিমান জাটকা ইলিশ দেখা দিয়েছে। পদ্মায় বড় ইলিশের দেখাই মিলছে না কিন্তু কারেন্ট জাল ফেললেই উঠে আসছে শুধু জাটকা। অত্র উপজেলায় রয়েছে প্রায় সাড়ে সাতশত পেশাদারী জেলে। এরা প্রত্যেকে একটি ছোট্ট ট্রলার ও কারেন্ট জাল নিয়ে পদ্মা নদীতে রাতভর নীধন করে চলেছে জাটকা ইলিশ। এছাড়া এলাকার কিছু দাদন ব্যাবসায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জেলেদের এনে তাদের মোটা অংক দাদন দিয়ে বড় বড় বেড়জাল ও দু’টি করে ট্রলার বানিয়ে দিয়েছেন। এসব অসাধু জেলেরা পদ্মা নদীর ক’য়েক কি.মি. এলাকার জলমহাল জুড়ে বেড়জাল দিয়ে ঘিরে রাখার পর আবার দু’টি ট্রলারের মাধ্যমে ৮/১০ জন জেলে জালদড়ি টেনে উঠিয়ে মনে মন জাটকা ইলিশ আটক করে চলেছে। অনেকে আবার সখ করেও কারেন্ট জাল দিয়ে পদ্মা নদীতে জাটকা নীধন করে চলেছে। সোমবার দুপুরে উপজেলা পদ্মা নদীর দিয়ালা গোপালপুর মৌজার জলমহালে গিয়ে দেখা যায়, পেশাদারী জেলেদের সাথে সাথে চরাঞ্চলের বসতি পরিবারের অনেক গৃহস্থ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা ইলিশ আটক করে চলেছে।
এদের মধ্যে পদ্মা নদীর চরঝাউকান্দা মৌজার এক বসতি ইব্রাহিম বেপারী (৪৮) বলেন, “ভাই ঘর গৃহস্থালীর ফাঁকে একটু সময় পাইছি, তাই জালদড়ি ও বাচ্চাদের সাথে নিয়ে পদ্মা নদীতে জাটকা ইলিশ ধরে খুব আনন্দ পাচ্ছি। এ বছর জাটকা নীধনের বিরুদ্ধে পদ্মায় কোনো অভিযান হয় নাই বিধায় সবার সাথে তাল মিলিয়ে সেও জাটকা আটক করছে বলে জানায়”। আরেক জাটকা শিকারী নাছের মন্ডল (৪৩) জানায়,“ কিছুদিন ধরে পদ্মায় জাল ফেললেই শুধু জাটকা ইলিশ উঠে। অন্য কোনো মাছই উঠে না। তাই জাটকা ধরে বিক্রি না করলে খামু কি ”।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উপজেলা পদ্মা নদীর দিয়ারা গোপালপুর মৌজার জলমহালে, চর কল্যানপুর মৌজার জলমহাল, চর কালকিনিপুর, চর তাহেরপুর, চর মির্জাপুর, চর শালেপুর, উত্তর শালেপুর, ভাটি শালেপুর, চর হাজীগঞ্জ মৌজা, চর মোহনমিয়া, মাঝিকান্দি, চরহরিরামপুর, চর ঝাউকান্দা, চর হোসেনপুর, জাকেরের সুরা মৌজা, টিলারচর মৌজা, মাথাভাঙ্গা ও চর মঈনূট চর মৌজার বিশাল জলমহলে প্রতিদিন সন্ধা থেকে ভোররাত পর্যন্ত চালানো হচ্ছে জাটকা নীধনের মহড়া। এসব আটককৃত জাটকা ইলিশ বিভিন্ন বাজারের জেলেদের নিদৃষ্ট আড়ৎদারের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে থাকে। বিক্রিত মাছের ৬০ শতভাগ জেলেরা আর ৪০ শতভাগ টাকা দাদন দাতা আড়ৎদাররা নিয়ে থাকে বলে জানা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

jmitsolution_16012
© All rights reserved © 2025
Developed By : JM IT SOLUTION